যতদূর চোখ যায় ততদূর লাউ ক্ষেত। তার ক্ষেতের মাচায় ঝুলছে শত শত লাউ। দিগন্তজোড়া এই লাউ দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় তার। লাউ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কুড়িগ্রামের দুলাল খন্দকার। দুলাল খন্দকার ২০ বছর ধরে লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন। তিনি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার বাসিন্দা। উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের মীরের বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
এখন খরিপ-২ মৌসুম চলছে। তিনি বসত বাড়ির পাশেই চল্লিশ শতক জমিতে লাউয়ের আবাদ করে আসছেন।
কুড়িগ্রাম জেলা থেকে শুরু উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে তার ক্ষেতের উৎপাদিত লাউ।
লাউ চাষি দুলাল খন্দকার জানান যে, বিশ বছর আগে লাউয়ের আবাদ শুরু করেন তিনি।
তবে অনান্য সবজিতে তেমন লাভের মুখ দেখেন নি তিনি।
তবে লাউ চাষে যথেষ্ট পরিমাণে লাভবান হতে শুরু করেন।
তারপর থেকেই তিনি লাউ চাষে ঝুঁকে পড়েন।
এই আয় দিয়েই তিনি তার পরিবারের সকল ভরণপোষণ করে আসছেন।
এছাড়াও লাউ চাষে আয়ের টাকা দিয়ে তিন ছেলেকে লেখাপড়া করাচ্ছেন।
তার বড় ছেলে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে বর্তমানে চাকরি করছে পুলিশে।
তার দ্বিতীয় ছেলে ডিগ্রি পাস করে এনজিওতে চাকরি করছে।
তৃতীয় ছেলে মাস্টার্সে পড়ছে। লাউ চাষে কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হননি বলে তিনি জানান।
বিশ বছর ধরে লাউ চাষে যথেষ্ট লাভবান হয়েছেন তিনি।
এ বছরও তিনি ৪০ শতক জমিতে লাউ চাষ করেছেন বলে তিনি জানান।
লাউ এর জমি তৈরি ও পরিচর্যা খাতে তার ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার টাকা।
তাতে করে ফলন ভালো হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই আট হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন তিনি।
এবার লাউ বিক্রি করে এক লাখ টাকা আয় করবেন বলে আশা করেন তিনি।
দুলাল খন্দকারের ছোট ছেলে আশিক খন্দকার জানান, তিনি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে মাস্টার্সে পড়ছেন তিনি।
৭-৮ বছর বয়স থেকেই বাবার সাথে লাউ ক্ষেতে কাজ করেন তিনি।
তিনি জানান তাদের লাউয়ের ফলন অত্যন্ত ভালো হয়।
প্রতি বছর গড়ে ৭০ হাজার টাকা করে আয় করেন তিনি।
কৃষক দুলাল খন্দকারের ছোট ভাই কৃষক নাজিমুল হক খন্দকার জানান, তার লাউ চাষ দেখে মুগ্ধ হয়ে আমিও লাউ চাষের চেষ্টা করতেছি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার নয়টি উপজেলার শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল ১১৪৮ হেক্টর জমিতে।
তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে শাকসবজির চাষ হয়েছে ১১৯৫ হেক্টর জমিতে।
এতে শাক-সবজির ফলন ভালো হয়েছে।
রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সম্পা আক্তার বলেন, এ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ৭শ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষের।