Friday, 31 October, 2025

রাবার ড্যাম অকেজো ছয়বছর ধরে, সেচ সমস্যা ২০ গ্রামে


পঞ্চগড়ের তালমা নদীতে নির্মিত রাবার ড্যাম অকেজো ছয়বছর ধরে। ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় রাবার ড্যামটি। কিন্তু এখন কোনো কাজে আসছে না। ২০ গ্রামের দেড় হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধা না পেয়ে বোরো আবাদের বাইরে থাকছে।
প্রকল্পের অধীনে তৈরি করা ক্যানেলগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে প্রায়।

বোরো মৌসুমে সেচের অভাবে কৃষক ঝুঁকছে অন্য ফসল আবাদের দিকে।

আরো পড়ুন
সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময়সীমা বাড়লো: ৫০ প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন সুযোগ
রপ্তানিযোগ্য সুগন্ধি চাল

রপ্তানির সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পর অবশেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সোমবার Read more

হালদা নদী রক্ষায় বড় পদক্ষেপ: পরিবর্তন আসছে গেজেটে, বন্ধ হবে তামাক চাষ ও দূষণ
হালদা নদী, গেজেট পরিবর্তন, তামাক চাষ বন্ধ

দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার Read more

এদিকে নদী প্রায় পানিশূন্য, তাই এখন জনমানব শূন্য রাবার ড্যাম ঘিরে গড়ে ওঠা পর্যটন কেন্দ্রটিও।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর  এজিইডি বলছে, ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি নদীতে ১০টি রাবার ড্যাম নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

এর অধীনে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পঞ্চগড় সদরের তালমা নদীতে রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়।

একই সময়ে ওই নদীসংলগ্ন হাফিজাবাদ ও কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় সেচ সুবিধা দেবার লক্ষ্য ঠিক করা হয়।

এর জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে পানি প্রবাহের ক্যানেল নির্মাণ করা হয় রাবার ড্যাম সংলগ্ন।

রাবার ড্যামের মাধ্যমে ১৯ গ্রামের প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধায় নিয়ে আসার কথা।

স্বল্প খরচে পরের বছর থেকে সেচ সুবিধা পায় ওই এলাকায় প্রায় ১০ গ্রামের কয়েক শ মানুষ।

নতুন দিগন্তের সূচনা হয় বোরোসহ রবিশস্য চাষে।

ড্যামের রাবার ব্যাগে বাতাস ঢুকিয়ে প্রায় ১২ ফুটের মতো ফোলানো হয়।

এর ফলে নদীর পানি ক্যানেল দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত প্রবাহিত হতো।

তালমা রাবার ড্যাম থেকে শুরুতে পূর্ব দিকে মামা-ভাগিনা ব্রিজ হয়ে উত্তরে বিশমনি পর্যন্ত সেচ সুবিধা পাওয়া যেত

একইসাথে দক্ষিণে কুঁচিয়া মোড় পর্যন্ত কৃষক সেচ সুবিধা পেতেন।

রাবার ড্যামটি নির্মাণের পর প্রথম এক বছর পর থেকে স্বল্পপরিসরে সেচ সুবিধা পাচ্ছিলেন কৃষকরা।

২০১৪ সাল থেকে বড় ধরনের ত্রুটি দেখা দেয়, এতে রাবার ড্যামটির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

অন্যদিকে ২০১৭ সালের বন্যায় ড্যামের পানিপ্রবাহের নালা বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এজিইডি ২০১৮ সালে সমিতির সহায়তায় রাবার ড্যামের ফেটে যাওয়া অংশ সংস্কার করে পুনরায় চালু করে।

কিন্তু ৪-৫ ফুটের বেশি ফোলাতে না পারায় নদীতে বেশি পানি ধারণে ব্যর্থতায় সেচ সুবিধা কমেযায়।

চলতি বছর ড্যামের সংস্কার করা অংশে আবারও এক মিটার ফেটে যায়।

এর সংস্কারকাজ না করায় কিছুদিন পর কে বা কারা এক মিটার ফাটা অংশের তিন মিটার কেটে দেয়।

একে নাশকতা হিসেবে দেখছে রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি।

কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজাদ হোসেন এ নিয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, রাবার ড্যামটি কৃষকের সুবিধার কথা বিবেচনা করে তালমা নদীতে স্থাপন করা হয়।

পঞ্চগড় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামসুজোহা। 

তিনি বলেন, ফুটো হবার কারণে রাবার ড্যামটি অচল হয়ে আছে।

গত বছর সংস্কার হলেও এবার রাবার ব্যাগের গোড়ায় তিন মিটারের বেশি ফেটে রয়েছে।

স্থানীয় জনবল দিয়ে এটি সংস্কার সম্ভব নয়।

আগামী মৌসুমের আগেই ড্যামটি সংস্কার করার চেষ্টা করছেন তারা।

0 comments on “রাবার ড্যাম অকেজো ছয়বছর ধরে, সেচ সমস্যা ২০ গ্রামে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ