ভাসমান বেডে কৃষি চাষ দিন দিন ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হচ্ছে। এতে বেকারত্ব ঘোচার সাথে সাথে কৃষকদের সংসারে ফিরছে সচ্ছলতা।ভাসমান বেডে কৃষি চাষ এ আগ্রহী হচ্ছে স্থানীয় কৃষক।
উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকদের সমস্যা লেগেই থাকত চাষাবাদ নিয়ে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সেই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দিয়েছে।
প্রান্তিক কৃষকরা ভাসমান বেডে নানান সবজি, মসলা রোপণ করছেন।
একইসাথে মাছ চাষও করা যায়
কৃষকরা জানান বছরে ৭ থেকে ৮ বার সবজি চাষ করা যায় এক-একটি বেডে।
সেই সঙ্গে বেডের জলে একই সাথে মাছ চাষও করা যায়।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, ঝালকাঠি নিম্নাঞ্চল হবার কারণে কৃষকের তৈরি বীজতলা বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যেত।
নিজেদের উদ্যোগে কৃষি বিভাগ বেড তৈরি করে দিচ্ছে কৃষকদের কলাগাছের ভেলা ও কচুরিপানা দিয়ে।
বর্তমানে প্রায় ৭ হেক্টর জমিতে ভাসমান বেড রয়েছে জেলায়।
ভাসমান এসব বেডে লালশাক, মুলাশাক, লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স, ধনিয়াসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি ও মসলা চাষ করা হচ্ছে ।
কৃষক সালেহ আহম্মেদ বেড পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে লাভবান হয়েছেন।
তিনি জানান, গত দুই বছর ধরে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছেন তিনি।
সেই বেডে তিনি লালশাক, মুলাশাক, ঢ্যাঁড়শসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও মসলা চাষ করেছেন।
বেড পদ্ধতির চাষে তেমন কোনো খরচ না হয় না।
সেকারণেও লাভবান হয়েছেন বলে জানান সালেহ আহম্মেদ।
কৃষক মোকসেদ আলী বলেন, প্রথমে পানির ওপরে কলাগাছ অথবা বাঁশ বিছিয়ে বেড বা মাচা তৈরি করা হয়।
তার ওপর কচুরিপানা তুলে দিয়ে প্রস্তুত করা হয় বেড।
আর এই কচুরিপানাগুলো পঁচানো হয়।
তার ওপরেই বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, পানি যতই বাড়তি থাকুক বেডের ওপরে রোপণ করা চারার কোনো ক্ষতি হয় না।
তাছাড়া এতে কোনো ধরনের সার-কীটনাশকও দিতে হয় না।
বন্যার পানি বাড়লেও এসব বেডের কোন ক্ষতি হয় না
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফজলুল হক। তিনি বলেন, ঝালকাঠি জেলায় চাষাবাদের জমি অন্য জমির তুলনায় বেশ নিচু।
তাই বর্ষার পানিতে এসব জমি ডুবে যায়।
তাই কৃষকরা বেড পদ্ধতির চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এতে চাষিরা কৃষিকাজে লাভের মুখ দেখবেন।
জলাবদ্ধ ও বন্যাদুর্গত অঞ্চলের কৃষকরা সারা বছরই ভাসমান বেডে সবজি চাষ করতে পারেন।
এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ খুব লাভজনক।
কৃষকদের মাঝে সেকারণে আগ্রহ বাড়ছে।
বর্তমানে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন বেড পদ্ধতিতে চাষ করতে।