বাজারে পেঁয়াজ, আলু, ভোজ্যতেলসহ সবজির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে ভোক্তারা বিপাকে পড়েছেন। কয়েক মাস ধরে এসব পণ্যের দাম বাড়তে থাকায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। নতুন আলুর দাম ৯০-১০০ টাকা এবং পুরোনো আলু ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির দামও অনেক বেশি, যার মধ্যে কিছু সবজি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
সরকার পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করলেও তা কার্যকর করতে পারছে না। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দাম মানছেন না এবং ক্রেতারা তাদের কাছে জিম্মি। তিনি আরও বলেন, তদারকি সংস্থাগুলোর দুর্বলতার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সূত্র জানায়, ভারত থেকে আমদানি করা আলুর দাম ২৫-৩০ টাকার মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও তা খুচরা পর্যায়ে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর জন্য আমদানিকারক ও ঢাকার শ্যামবাজারের আড়তদার সিন্ডিকেটকে দায়ী করা হচ্ছে।
খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪-৫ টাকা এবং পাম তেলের দাম ৩-৪ টাকা কমেছে। তবে বোতলজাত তেলের সরবরাহ কিছুটা কম থাকায় খুচরা পর্যায়ে বিক্রি কম হচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দাবি, বাজার তদারকিতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যেমন জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া।
বাজারে আসা ক্রেতারা, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ, এই মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা। মো. আল আমিন নামে এক ক্রেতা বলেন, “বাজারে এলে হাহাকার লাগে। সবকিছুর দাম এত বেশি যে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।”
নিত্যপণ্যের বাজারে এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। কার্যকর তদারকি ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না।