
নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের শতাব্দীপ্রাচীন পতিত জমিতে এবার মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় হেক্টরপ্রতি প্রায় ১০ হাজার পিস (৩৫ মেট্রিক টন) কুমড়া উৎপাদিত হয়েছে। মোট ২৫০ হেক্টর জমিতে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা। খরচ বাদে কৃষকদের নিট আয় সোয়া ৫ কোটি টাকা।
দীর্ঘদিন ধরে হাওরাঞ্চলের হাজার হেক্টর সরকারি জমি পতিত থাকলেও জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এসব জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে। এখন সেখানে মিষ্টি কুমড়ার পাশাপাশি বাদাম, ক্ষিরা, সূর্যমুখী, সরিষা ও নানা ধরনের শাকসবজির চাষ হচ্ছে। এতে প্রায় শতাধিক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
খালিয়াজুরী উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক আলা উদ্দিন, কাশেম মিয়া ও জয়নাল মিয়া জানান, পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে তারা বোরো ফসলের চেয়ে চারগুণ বেশি আয় করেছেন। মদন উপজেলার বাগজান গ্রামের ফয়েজ আহমেদ বলেন, “বেকারত্ব দূর করে অনেক যুবক এখন শাকসবজি চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। দেশের নামীদামি কোম্পানিগুলো সরাসরি আমাদের কুমড়া কিনে নিচ্ছে।”
মদন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, “এখানে ১ টাকা খরচ করে ৪ টাকা আয় করা সম্ভব। উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মিষ্টি কুমড়া উৎপাদিত হয়েছে। আরও ১ হাজার হেক্টর জমি চাষযোগ্য করলে ৬০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন সম্ভব।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, “হেক্টরপ্রতি ৩০ হাজার টাকা খরচ করে কৃষকরা ২ লাখ টাকার বেশি আয় করছেন। পতিত জমি চাষাবাদের ফলে বেকারত্ব কমছে, কৃষি উৎপাদন বাড়ছে।”
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজ ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা তাদের স্বাবলম্বী করতে ভূমিকা রেখেছে। আগামীতেও এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।