
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর তথ্যমতে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ১৪.৪৫% বৃদ্ধি পেয়ে ৩১৬.২ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। এর মধ্যে শুধু চিংড়ি রপ্তানিই ১৭.০৬% বেড়ে ২১৫.৯ মিলিয়ন ডলার অর্জন করেছে। শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারি মাসেই রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২৩.২৫%।
সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ছয় মাস ধরে হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের বহু প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা এখনো বন্ধ রয়েছে। শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাঁচামাল সংকট, আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি এসব কারখানা বন্ধের মূল কারণ।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফএ) সূত্রে জানা যায়, বিদেশি বাজার থেকে চিংড়ির চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও কাঁচামালের অভাবে রপ্তানিকারকরা উৎপাদন বাড়াতে পারছেন না। সংগঠনটির ২০০ সদস্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ২৫% বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে। বাকি ৭৫% কারখানা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে।
খুলনায় প্রায় ৩০টি কারখানা চালু থাকলেও স্থিতিশীলভাবে কাজ করছে মাত্র ১০-১২টি। চট্টগ্রামের কারখানাগুলোর অবস্থাও সন্তোষজনক নয়।
একাধিক রপ্তানিকারক জানান, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের অর্ডার থাকলেও মাছের পোনা ও কাঁচামালের অভাবে উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না। অনেক মৎস্য খামারি উচ্চ উৎপাদন খরচ, অবকাঠামোগত সমস্যা ও অর্থসংকটের কারণে সাময়িকভাবে উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন।
বিএফএফইএর এক কর্মকর্তা বলেন, “ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে চাহিদা বাড়লেও কাঁচামালের ঘাটতি রপ্তানি বৃদ্ধির পথে প্রধান বাধা। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে এই সম্ভাবনাময় খাতের টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।”
শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভেনামি চিংড়ি চাষের দিকে ঝুঁকছে অনেক উদ্যোক্তা, কিন্তু কাঁচামালের নিশ্চয়তা না থাকায় রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ কঠিন হয়ে পড়ছে।