Tuesday, 06 June, 2023

সর্বাধিক পঠিত

তরমুজ চাষ পদ্ধতি


Water Melon_তরমুজের চাষ

বাংলালিংক, ব্লাককুইন, হানিডিউ,গোল্ডেন গ্লামার কিংবা সাগর কিং – তরমুজের নানা বাহারি জাত এখন বাংলাদেশে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের কৃষি বিভাগ বলছে দেশে এবার রেকর্ড প্রায় ষোল লাখ টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে এবং দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোসহ দেশের প্রায় সর্বত্রই তরমুজ উৎপাদনে দারুণভাবে সফল হয়েছে চাষিরা।

আজকের আলোচনা তরমুজের চাষ পদ্ধতি নিয়ে –

তরমুজ চাষের মাটি কেমন হবে ?

আরো পড়ুন
হঠাৎ পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা
মুড়ি পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে কৃষক

দেশে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা। পাইকারি বাজারে ২ দিনের ব্যবধানে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। Read more

সিলেটে ২ হাজার ৯৯ হেক্টর জমিতে চিনাবাদাম চাষ, আশাবাদী কৃষক

সিলেটে কৃষকের কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠছে চিনাবাদাম। সিলেটে ২ হাজার ৯৯ হেক্টর জমিতে চিনাবাদাম চাষ। চিনাবাদাম ফলিয়ে লাভবানও হচ্ছেন কৃষক। Read more

জমিতে পানি জমে না এমন দোআঁশ – বেলে দোআঁশ মাটি। পানি জমতে দিলে চাষের তরমুজের পচন হয়। ক্ষতিগ্রস্থ হবে চাষি।

বীজ বোনার সঠিক সময় কখন ?

শীতের শেষে জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম পক্ষ সর্বোত্তম। তবে,জানুয়ারি, মে ও সেপ্টেম্বর মাসে বীজ বপন করা যায়।

কিভাবে তরমুজের বীজ বপন করবেন ?

বীজ বপনের ৮-১০ দিন আগে মাদা তৈরি করে নিতে হয়। মাদার মাটিতে সার মিশাতে হয়। ২ মিটার দূরে দূরে সারি করে প্রতি সারিতে ২ মিটার অন্তর মাদা করতে হবে। প্রতিটি মাদা সাধারণত ৫০ সেমি. প্রশস্ত ও ৩০ সেমি.গভীর হতে হবে।

প্রতি মাদায় ৪-৫টি বীজ বপন করা যাবে। চারা গজানোর পর প্রতি মাদায় দুটি করে চারা রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলাই উত্তম।

শীতকালে খুব ঠাণ্ডা থাকে বিধায় বীজ ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে গোবরের মাদার ভেতরে অথবা মাটির পাত্রে রাখা বালির ভেতরে বীজ রেখে দিলে ২-৩ দিনের মধ্যে অঙ্কুরিত হয়। কেবল মাত্র বীজের অঙ্কুর দেখা দিলে তা বীজ তলায় বা মাদায় স্থানান্তর করা উত্তম।

তরমুজ গাছের চারা রোপন এবং পরিচর্যা

বীজ থেকে উৎপাদিত চারা আলাদা রপন করায় ভাল। চারা তৈরির ক্ষত্রে ছোট ছোট পলিথিনের ব্যাগে বালি ও পচা গোবর সার ভর্তি করে প্রতিটি পলিব্যাগে ১ টি করে বীজ বপন করতে হবে। পরবর্তীতে ৩০-৩৫ দিন বয়সের ৫-৬ পাতাবিশিষ্ট ১ টি চারা মাদায় রোপণ করতে হবে।

চারা রোপনের ১০-১৫ দিন পরে ইউরিয়া ৩০ কেজি এবং পটাশ ১৫ কেজি ছোট রিং করে দিতে হবে ও আগাছা বেছে ফেলতে হবে।
ফুল আসার পর বড় রিং করে ইউরিয়া ১৮ কেজি এবং পটাশ ১৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে।

গাছে যখন ৮-১০টি পাতা হয় তখন কমপক্ষে ৫টি গিট রেখে প্রধান শাখার মাথা কেটে দিতে হবে এবং পরবর্তীতে প্রধান শাখার সাথে ৪-৫ টি প্রশাখা রেখে বাকিগুলো কেটে ফেলতে হবে। প্রতি প্রশাখায় ১ টি করে ফল (১২-১৩ গিটে) রেখে অতিরিক্ত ফলগুলো ফেলে দিলে ভাল মান সম্পন্ন ফল পাওয়া যায়।

তরমুজ গাছের ফুলের পরাগায়ন

একই তরমুজ গাছে পুরষ ও স্ত্রী দু রকমের ফুল হয়। স্ত্রী ফুল স্বাভাবিকভাবে সম্পূর্ণ রূপে পরাগায়িত হয় না। পরগায়ন না হলে তা ঝরে যায বা ফলের আকার ভাল হয় না।

সকাল বেলা স্ত্রী ও পুরুষ ফুল ফোটার সাথে সাথে স্ত্রী ফুলকে পুরষ ফুল দিয়ে পরাগায়িত করে দিলে ফল ঝরে যায় না ও ফলের আকারও নষ্ট হয় না।

ফসলের জমিতে সেচ ও পানির ব্যবস্থা

তরমুজ কিছুটা খরা সহ্য করতে পারে। তবুও শুকনা মৌসুমে সেচ দেয়া খুব প্রয়োজন। গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। স্যাঁতস্যাতে অবস্হায় তরমুজের গোড়ায় সহজেই পচা রোগ ধরতে পারে। মাটির উপর খড় বিছিয়ে দেয়া ভাল।

Water Melon_তরমুজের ক্ষেত
Water Melon_তরমুজের ক্ষেত

তরমুজের ফল কত বড় হবে তা অনেকটা নির্ভর করে গাছে ফলের সংখ্যার উপর। এজন্য প্রতি গা ৩-৪ টির বেশী ফল রাখা উচিৎ নয়। অতিরিক্ত সব ফল কচি অবস্থাতেই ফেলে দিতে হয়। গাছের শাখার মাঝামাঝি গিটে যে ফল হয় সেটিই রাখতে হয়। চারটি শাখায় চারটি ফলই যথেষ্ট।

ফসলের জমিতে বায়োলজিকাল বা জৈব নিয়ন্ত্রন

ফসলের মাছি পোকা দমনে জমিতে আগে থেকেই সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যাবহার করতে হবে। এ ছাড়া মাচা পদ্ধতিতে প্যাচিং করলে পাখির মাধ্যমে পোকা দমন করা যায়।

পরিপক্ক তরমুজ চেনার উপায় কি?

আঙ্গুল দিয়ে টোকা দিলে যদি ড্যাব ড্যাব শব্দ হয়। ড্যাব ড্যাব শব্দে বুঝতে হবে যে ফল পরিপক্কতা লাভ করেছে। অপরিপক্ক ফলের বেলায় শব্দ হবে অনেকটা ধাতবীয়।

পরিপক্ক তরমুজ চেনার উপায়

ফসল উত্তলন

জাত ভেদে বারমাসি তরমুজ ৫৫-৮০ দিনে এবং বড় তরমুজ ৯০-১২০ দিন পর ফল সংগ্রহ করা যায়। সম্পূর্ণ পাকার পর বোটাসহ ফল তুলতে বা পাড়তে হয় ।

0 comments on “তরমুজ চাষ পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

সাম্প্রতিক প্রশ্ন

error: Content is protected !!