ভাটার ধোয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা
কৃষি ভিত্তিক বাংলাদেশে যেকোন মানুষ ই নিজেকে কৃষির সাথে জড়িত পরিচয় দিতে খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কিন্তু কৃষির শত্রুও তৈরি করে এদেশের মানুষ। কৃষির অন্যতম বড় শত্রু হচ্ছে ইটভাটা। যা আমাদের দেশে বর্তমানে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। প্রত্যন্ত প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই দেখা যায় যে ইট ভাটা কৃষি জমিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
এমনটি ঘটছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবস ও ফুলবাড়ি সদর ইউনিয়নের নাগদাহ গ্রামে। ইটভাটার বিষাক্ত ধোয়ার ফলে প্রকৃতির উপর খুব ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। মাঠের ধানও ফলের গাছ, বাশঝাড় ও সুপারি বাগান সবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে খড়িবাড়ি সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের নিকটবর্তী এবং নওদাবশ গ্রামে মেসার্স আলতাফ ব্রিকস নামে ইটভাটা থেকে নির্গত ধোয়ায় প্রায় ২০ বিঘা জমির ধান চিটা হয়েগেছে। বিভিন্ন গাছের পাতা সমূহ বাদামী রং ধারণ করেছে, পুড়ে গেছে, ঝড়ে গেছে বিভিন্ন ফল পরিপক্ক হবার আগেই।
গ্রামের স্থানীয় কৃষক জানান, মুকুল, বিশ্বনাথ, মামুদ ও তাজুল সহ অনেকের ধানক্ষেতের পাশাপাশি বাশঝাড় ও ফলের বাগান নষ্ট হয়ে গেছে। একই অবস্থা ব্যক্ত করেছেন জাহিদুল, ক্ষিতিশ, বাহারউদ্দিন সহ আরও অনেকে।
একজন কৃষক বলেন নির্গত ধোয়ায় শত শত কৃষকের ফসল গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে না। ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক জানান, ভাটার দুই কিলোমিটারের মধ্যে বিভিন্ন গাছপালা ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে ভাটার মালিকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি পাত্তা দেননি।
তবে ভাটার মালিকের দাবি ক্ষতির পরিমাণ সামান্যই। মালিক আলতাফ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় ভাটার ধোয়ার কারণে সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে। খুব শীঘ্রই তিনি ক্ষতিপূরনের ব্যবস্থা করবেন। অপরদিকে ইউএনও মাছুমা আরেফিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবী তাদের ভাটার মালিক সামান্য বলে উড়িয়ে দিলেও এ ক্ষতি তাদের জন্য সামান্য নয়। তাই স্থানীয় কৃষক ও দিনমজুর তাদের ক্ষতিপূরণ আদায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।