পরিচিত একটি ফল কামরাঙা। কামরাঙ্গা এর বৈজ্ঞানিক নাম: Averrhoa carambola Linn, ইংরেজি নাম: Chinese gooseberry বা Carambola ।
ফলের স্বাদ টক-মিষ্টির মিশেল, পাকলে মিষ্টি হয়। এই ফল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। কামরাঙার বিভিন্ন জাতের মধ্যে থাই জাতের কামরাঙার স্বাদ খুব মিষ্টি ।
ছাদে বা টবে সহজেই কামরাঙা চাষ করা যায় । থাই জাতের ফলনও খুব ভাল হয় । কেবল ৬ মাসের মধ্যে ফল পাওয়া যায় এই থাই মিষ্টি কামরাঙার। এর বংশবৃদ্ধি কলমের চারা থেকে হয়।
সারা বছরই কামরাঙা গাছে কম-বেশী ফল থাকে। বিশেষ করে জুন-জুলাই মাসে এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারীতে প্রচুর ফল পাওয়া যায় । যে কোন মাটিতে এবং যেকোন টবে মিষ্টি কামরাংগার চাষ করা সম্ভব । কামরাঙা গাছে রোগ বালাই তেমন একটা হয় না ।
কিভাবে চাষ করতে হবে
একটি ২০ ইঞ্চি টব বা হাফ ড্রাম সংগ্রহ করতে হবে। পানি যেন না জমে তাই ড্রামের নিচের দিকে ৩-৫ টি ছিদ্র করতে হবে । কারণ গাছের গোড়ায় পানি জমলে গাছ নষ্ট হয়ে যাবে । তলার এই ছিদ্রগুলো ইটের ছোট কিছু টুকরা দিয়ে বন্ধ করে ফেলতে হবে ।
এবার মাটির তৈরি করতে হবে।নিতে হবে ২ ভাগ বেলে দোআঁশ মাটি। এর সাথে ১ ভাগ গোবর, ৪০-৫০ গ্রাম পটাশ সার, ৪০-৫০ গ্রাম টি,এস,পি সার একত্রে মিশিয়ে নিতে হবে।
এই মাটি টবে ভরে ১০-১২ দিন পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে । এবার মাটি খুচিয়ে দিয়ে আবার এভাবেই ফেলে রাখতে হবে।
এবার মাটি ঝুরঝুরে হয়ে গেলে একটি সবল সুস্থ কলমের চারা নিন। এই চারা টবে রোপন করে দিতে হবে। গাছের গোড়া থেকে মাটি যেন আলাদা না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চারা গাছটি সোজা করে লাগিয়ে গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উচু করে দিতে হবে। গাছের গোড়ায় মাটি হাত দিয়ে চেপে দিতে হবে যেন গাছের গোড়ায়বেশী পানি ঢুকতে না পারে ।
গাছ সোজা রাখতে শক্ত কাঠি দিয়ে বেধে রাখতে হবে । প্রথমদিকে অল্প করে পানি দিতে হবে। খুব বেশি পানি দিতে হবে না বা কম পানিও না। পানি বেশি হলেও পাতা ঝড়ে পড়ে আবার কম হলেও পাতা ঝড়ে।
গাছের পরিচর্যাঃ
গাছ লাগানোর পর পানি দিতে হবে নিয়মিত। প্রথম ৪/৫ মাস সরিষার খৈল পচা পানি দিতে হবে। তারপর থেকে নিয়মিত ২৫-৩০ দিন পর পর এই পানি দিতে হবে ।
১ বছর পর পর মাটি পরিবর্তন করতে হবে । ছাটাই করে গাছের মরা ডালগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে । ১০-১৫ দিন পর পর টবের মাটি খুচিয়ে ঝুরঝুরে করে দিতে হবে।
কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা
কামরাঙ্গার পাতা ও কচি ফলে আছে ট্যানিন, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
কামরাঙ্গা পুড়িয়ে ভর্তা করে খেলে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। দীর্ঘদিনের জমাট সর্দি বের করে দিয়ে কাশি উপশম করে। শুকনো কামরাঙ্গা জ্বরের জন্য খুব উপকারী।