ফিলিপাইনের ‘এমডি-২’ জাতের আনারস এর আবাদ শুরু হয়েছে দেশে। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় শুরু হয়েছে এর চাষ। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বিশেষ আগ্রহে এর চারা আমদানি করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মাধ্যমে ফিলিপাইন থেকে এক লাখ এমডি টু জাতের আনারসের চারা আমদানি হয়। এসব চারা সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। উপজেলার ১৭ জন চাষি এ চারা রোপণ করেছেন।
এ ধরনের আনারস সাধারণ আনারসের চেয়ে অনেক বেশি মিষ্টি হয়।
এ ছাড়া কাটার পর সহজে পচে না।
তাই পচন রোধে কোনো প্রকার রাসায়নিক প্রয়োজন হয় না।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য অনেক ইতিবাচক হবে।
মধুপুরের পুরো পাহাড়ি অঞ্চল আনারস চাষের জন্য বিখ্যাত।
পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে আনারসের উৎপাদন হয়েছে।
শুধু মধুপুর উপজেলাতেই প্রায় ছয় হাজার হেক্টর জমিতে আনারস উৎপাদন হয়।
বিপুল পরিমাণের এই আনারস প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে হয়।
এগুলো রপ্তানির মাধ্যমে মধুপুরকে প্রকৃতই ‘ক্যাপিট্যাল অব পাইনাপেল’–এ পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সে কারণে রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাতের আনারস আমদানি ও চাষিদের মাধ্যমে বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্র বলছে, ফিলিপাইন থেকে আনা হয় এই উন্নত জাতের আনারসের চারা।
প্রায় এক লাখ চারা মধুপুরের মহিষমারা ইউনিয়নে বিতরণ করা হয়।
চারা বিতরণের আগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কৃষক, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের’ প্রকল্প চলছে।
প্রকল্প পরিচালক মেহেদী মাসুদ।
তিনি জানান, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমডি টু জাতের আনারস ফিলিপাইন থেকে আনার উদ্যোগ নেন।
এ জন্য ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেন।
তিনি বিএডিসির মাধ্যমে এমডি টু জাতের আনারস আমদানির ব্যবস্থা করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ ফসল উৎপাদন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক মেহেদী মাসুদ আরও বলেন, এমডি টু উন্নত জাতের আনারস এবং তা রপ্তানিযোগ্য।
এ জাতের আনারসের সাইজও ভালো এবং অনেক বেশি মিষ্টি।
দেশি আনারসের চেয়ে ভিটামিন সি–এর পরিমাণ তিন–চার গুণ বেশি।
এই আনারস দ্রুত পচে না, চোখগুলো থাকে বাইরের দিকে থাকে।
ফলে অপচয় কম হয় পুষ্টিগুণসম্পন্ন অংশের।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম।
তিনি জানান, আমদানি করা উন্নত জাতের আনারসের চারা নেবার জন্য অনেকেই আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।
কিন্তু প্রথমে বড় চাষিদের এ চারা দেওয়া হয়েছে।