Friday, 17 May, 2024

সর্বাধিক পঠিত

শখের ফল বাগান এখন বাণিজ্যিক বাগান দেলোয়ার হোসেনের


তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মো. দেলোয়ার হোসেন টাঙ্গাইলের বাসিন্দা। জেলার মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামে বসবাস তার। ২০১৫ সালে শখের ফলের বাগান শুরু করেন ১০০ পেয়ারা গাছের চারা দিয়ে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে করেন মাল্টা বাগান। বাগানে প্রথম ৮৫টি মাল্টাগাছ লাগান তিনি। তাঁর বাগানে ১ হাজার ১০০টি গাছে মাল্টা ধরেছে বর্তমানে। দেলোয়ারের শখের ফল বাগান এখন বাণিজ্যিক বাগান।

চলতি মৌসুমে তরুণ এই কৃষি উদ্যোক্তা শুধু মাল্টাই ছয় লাখ টাকায় বিক্রি করার আশা করছেন। তার মতে ছয় লাখ টাকায় মাল্টা বিক্রি হলে লাভ থাকবে অন্তত চার লাখ টাকা। বাগানের অন্যান্য ফল বিক্রি করেও বেশ মুনাফা হবে। যেহেতু ফল গাছ সব প্রাপ্তবয়স্ক এবং আগামী বছর উৎপাদন খরচ কমে যাবে। তখন আরও বেশি লাভ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

শখের ফলবাগান

আরো পড়ুন
বায়োফ্লকের পানি তৈরি করার পদ্ধতি বা নিয়ম
বায়োফ্লক ট্যাংক

বায়োফ্লকে পানি তৈরি বায়োফ্লক মাছ চাষের অন্যতম প্রধান কাজ। বায়োফ্লক শুধুমাত্র ফ্লক তৈরি করতে না পেরে অনেকে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। Read more

চলমান তাপ প্রবাহে হাঁস-মুরগি ও প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা
চলমান তাপ প্রবাহে হাঁস-মুরগি ও প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা

তীব্র তাপপ্রবাহ হাঁস- মুরগি ও গবাদিপ্রাণির দেহে নানা ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পীড়ন (স্ট্রেস) তৈরি করে, ফলে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপ্রাণির Read more

দেলোয়ার পরিকল্পনা করে  পর্যায়ক্রমে বাগানের জমির আয়তন ও বিভিন্ন ধরনের ফলগাছের সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। বর্তমানে ৪ হাজার পেয়ারা, ১১০০ মাল্টা, ৬০০ লেবু, ৩০০ কলা, ৩৫০ পেঁপে, ২৬০ আম, ৮৫ দার্জিলিংয়ের কমলা, ৬৪ চায়না কমলা রয়েছে।

এছাড়াও রয়েছে আমড়া, লটকন, কতবেল, জাম্বুরা, ডালিম, চেরি ফল ও রামবুটান গাছ।  এখন তিনি পেয়ারা, আমড়া, বারোমাসি আম বিক্রি করা  শুরু করেছেন দেলোয়ার হোসেন।

পাঁচগাঁও গ্রামে দেলোয়ার হোসেন এর ফল বাগানে গেলে দেখা যায়, মাল্টা ঝুলছে বাগানের প্রতিটি গাছেই। মাল্টাগুলো ক্রেতা ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে কিনে নিচ্ছেন। এ ছাড়া আকার ভেদে কেজি দরে পেঁপে, পেয়ারা এবং আমড়া বিক্রি হচ্ছে।

পেয়ারা চাষে ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু মাল্টা চাষে ব্যাগিং পদ্ধতির প্রয়োজন হয় না। সময়মতো সার ও কীটনাশক প্রয়োগের সাথে ঠিকমতো যত্ন নিলেই মাল্টার ফলন হয়। তিনি নাটোর  দিনাজপুর ও ঝিনাইদহ থেকে চারা এনেছেন বলে জানান।

দেলোয়ার হোসেনের বাগানে বর্তমানে নিয়মিত চারজন শ্রমিক এবং বেশ কিছু অনিয়মিত  শ্রমিক কাজ করেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগও দেলোয়ারের উদ্যোগ দেখে  তাঁকে সহায়তা করছে।

পাঁচগাঁও গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পঞ্চম। ২০০২ সালে এসএসসি পাস করেন গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরের আনসার ভিডিপি উচ্চবিদ্যালয় থেকে ।

ঢাকা কলেজ থেকে ২০০৪ সালে এইচএসসি এবং ২০১১ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ২০১৪ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন ঢাকার তিতুমীর কলেজ থেকে। ঢাকায় একটি বায়িং হাউসে কাজ শুরুর পাশাপাশি গড়ে তোলেন ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান।

২০১৫ সালে দুই ব্যবসায়  লোকসান হলে  গ্রামের বাড়ি ফিরে নিজেদের জমিতে পেয়ারাগাছ লাগিয়ে ফলের বাগান শুরু করেন। এবার আর পেছনে তাকাতে হয়নি।নিজ প্রচেষ্টা, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে আরও বড় সাফল্যের দিকে ক্রমান্বয়ে ছুটে চলেছেন তরুণ এই উদ্যোক্তা।

0 comments on “শখের ফল বাগান এখন বাণিজ্যিক বাগান দেলোয়ার হোসেনের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *