ফেনীর পরশুরামে রাবার উৎপাদনে বড় অর্থনীতির সম্ভাবনা দেখা গেছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মির্জানগর ইউনিয়নে রাবার বাগান তৈরি করা হয়েছে। ইউনিয়নের জয়ন্তীনগর-বীরচন্দ্র নগর গ্রামে বিশাল এলাকা জুড়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাবার বাগান থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু হয়েছে রাবার। আর তাতে রাবার উৎপাদনে বড় অর্থনীতির সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যেই জায়গাটি অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফা গত তিন বছর ধরে রাবার সংগ্রহ করছেন।
১২ বছর আগে লাগানো গাছগুলো থেকে প্রায় প্রতিনিয়তই রাবার সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও স্থানটি ফেনীর অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী রাবার বাগান দেখতে ভিড় জমাচ্ছে।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, রাবার বাগানের জন্য সমতল ভূমি থেকে একটু উচুঁ আর পাহাড়ি এলাকা খুব বেশি উপযোগী।
এ সুযোগকেই কাজে লাগান বাগানের মালিক মো. মোস্তফা।
এ উদ্যোক্তা জানান, ২০০৯ সালে ২০ একর জমিতে ১০ হাজার রাবার গাছের চারা রোপণ করেছিলেন।
বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে রাবার বাগানের ৪ হাজার গাছ থেকে রাবারের উৎপাদন হচ্ছে।
গাছ রাবার সংগ্রহের জন্য উপযুক্ত হতে দশ বছর সময় লেগেছে।
কয়েক বছর পর বাকি গাছগুলো থেকেও রাবারের উৎপাদন শুরু হবে বলে জানান এ উদ্যোক্তা।
চার হাজার গাছ থেকে রাবার উৎপাদন হচ্ছে
বাগানের পরিচর্যাকারী চায়ং মারমা বলেন, এখন চার হাজার গাছ থেকে কষ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
পর্যায়ক্রমে সবগুলো গাছ থেকে রাবার সংগ্রহ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
শীতের চার মাস রাবার উৎপাদন বেশ ভালো হলেও বর্ষায় উৎপাদিত হয় কম।
রাবার উৎপাদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে চায়ং মারমা বলেন, ভোররাত থেকে প্রথমে রাবার বাগান থেকে কষ সংগ্রহ করা হয়।
পরে শুকনো রাবার শিট থেকে রোলার মেশিন দিয়ে পানি বের করে ড্রিপিং শেডে শুকিয়ে পোড়ানো হয়।
গাছ প্রতি দৈনিক প্রায় ৩০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম রাবার পাওয়া যায়।
বাজার দর অনুসারে লিটার প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা যায়।
বর্তমানে ১২০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার রাবার।
একটি রাবার গাছ ৩৫ বছর পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে রাবার উৎপাদনে সম্ভব হয়।
গত কয়েক বছরে বাগানটি পিকনিক স্পট হিসেবে অনেক মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানা যায়।
উদ্যোক্তা মোস্তফা জানান, রাবার বাগানে মাসিক দেড় লাখ টাকা খরচ হয়।
কিন্তু তিনি তেমন লাভের মুখ দেখছেন না।
পুরোদমে রাবার সংগ্রহ শুরু হলে তিনি লাভের মুখ দেখবেন।
পরশুরাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, সাধারণত রাবার উৎপাদনের উপযুক্ত পরিবেশ হল পাহাড় বা উচুঁ স্থান।
বৃষ্টির পানি সহজে নেমে যেতে পারে এমন মাটি খুব বেশি উপযোগী।
জয়ন্তীনগর গ্রামে গড়া বাগানটির মত আরও অনেক এলাকা রয়েছে।
সেখানেও রাবার বাগান হওয়া সম্ভব।
এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে রাবার বাগান বড় ধরণের ভূমিকা রাখতে পারবে।