Monday, 29 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

ইজারাদারদের হাতে ধুকছে কৃষিজমি


একটা সময় ছিল মানুষ বংশ পরম্পরায় কৃষিকাজ করত। সেই সময় পরিবর্তন হয়েছে অনেক আগেই। এখন যাঁদের হাতে কৃষিজমি আছে তারা ইজারা দিয়ে দিচ্ছে। আর তাই ইজারাদারদের হাতে ধুকছে কৃষিজমি ও কৃষিকাজ। তাছাড়া কৃষকের মাঝেও কৃষিকাজ করার ইচ্ছা দেখা যাচ্ছে না তেমন। উল্টো কৃষিকাজের নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে তাদের সাথে জমির মালিকানার কোন সম্পর্কই নেই।

কৃষিজমির মালিকেরা বর্তমান সময়ে তাদের জমি অন্যদের ইজারা দিচ্ছেন।

আরো পড়ুন
কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন রক্ষার্থে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির উন্মুক্ত স্থান। প্রজনন ক্ষেত্র বাচানোর জন্য রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে ২৫ এপ্রিল থেকে Read more

বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ

এবারের ২০২৪ সালের বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ রবিবার মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও Read more

মূলত তাঁরাই কৃষিকাজ নিয়ন্ত্রণ করছেন, যেখানে মূল কৃষকদের কোন দেখাই নেই।

আর এ কারনেই অর্থকরী ফসলের চাষ বেড়ে গেছে।

এতে করে দেশের কৃষির বাণিজ্যিকায়ন উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি ঘটছে।

কিন্তু এই ভাগচাষি বা ইজারদারেরা দেশের কৃষিতে সত্যিই কী কোন মাত্রা যোগ করছেন?

সেইসাথে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই কৃষকদের ভূমিকাও দেখার বিষয়।

রাজধানীতে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান(বিআইডিএস) একটি সেমিনারের আয়োজন করে।

‘বাংলাদেশের পারিবারিক কৃষি হারিয়ে যাচ্ছে’ আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

যুক্তরাজ্যের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক জিওফ উড এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

কৃষি অর্থনীতিবিদ এম এ সাত্তার মন্ডল এ অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন।

মহা পরিচালক বিনায়ক সেন দেশের কৃষিকাজের প্রকৃতিতে আলোকপাত করেন।

তার ভাষ্যমতে, ইজারাদার ও সেবাদাতারা ক্রমাগত কৃষকের জায়গা নিয়ে নিচ্ছেন।

আগে কৃষির মূল উপকরণ ছিল কৃষকের জমি ও পুঁজি।

কিন্তু এখন তা ক্রমেই পরিবর্তিত হতে দেখা যাচ্ছে।

কৃষি যন্ত্রীকরণের প্রভাবে পাওয়ার টিলার, রোপণযন্ত্র, ধান কাটার যন্ত্র ইত্যাদি ব্যাবহার হচ্ছে।

অনেকে এগুলো ভাড়ায় দিয়ে ইনকাম করছে।

দেশে বর্গা, ভাগ বা ইজারা চাষের জমির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে।

২০ থেকে ৪৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে ইজারা চাষের পরিমাণ।

এমন তথ্য উল্লেখ করেন মহাপরিচালক বিনায়ক সেন।

তার মতে, এখন দেখার বিষয় হচ্ছে ইজারাদারদের লক্ষ্য কি।

এদের মাধ্যমে কৃষি খাত শোষিত হবে, নাকি আরও বিকশিত হবে তা জানার বিষয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশের কৃষিজমির ধরন নিয়ে আলোচনা করা হয়।

জিওফ উড বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাথে কৃষি জমির সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়।

কিন্তু সমাজে ও অর্থনীতিতে কৃষকদের রয়েছে অনিশ্চয়তা।

আর সে কারনেই এখানকার মানুষ শুধুমাত্র তাদের নিরাপত্তা হিসেবে জমি রাখতে চায়।

কৃষি খাতে অন্যান্য অংশীজনের আগমন ঘটেছে।

তাই এখন বৃহদায়তন খামারও গড়ে উঠছে প্রচুর।

তাঁর মতে, দেশে বৃহদায়তনে কৃষি খামার গড়ে ওঠার পাশাপাশি ছোট ছোট জমির মালিকরাও থাকবেন।

এতে দেশে এক মিশ্র কৃষি ব্যবস্থা তৈরি হবার সম্ভাবনা গড়ে উঠেছে।

জিওফ উড মনে করেন, ২০৫০ সালের মধ্যে কৃষকের জমিতে কাজ করা শ্রমিক সংকট চরমভাবে দেখা দেবে।

দেশের অধিকাংশ মানুষ কিছু অংশ গ্রামে, কিছু অংশ শহরে করে অবস্থান করে।

এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ জানান, ২০৫০–৬০ সালের মধ্যে পুরো বাংলাদেশে আর গ্রাম থাকবে না, শহরে পরিণত হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গ্রামীণ সমাজে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন।

এম এ মান্নান বলেন, দেশের গৃহহীন মানুষদের জন্য বাড়ি নির্মাণ করার কারণে মানুষ নিজেদের জন্য ঠিকানা পাচ্ছে।

পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, কৃষির প্রতি গবেষকদের মনোযোগ আগের মত নেই।

দেশের গ্রামাঞ্চল আবারও মনোযোগের দাবিদার হয়ে উঠেছে বালে তিনি মনে করেন।

তবে দেশে ক্ষুদ্র কৃষকেরা এখনো হারিয়ে যাননি।

বিআইডিএসের বিভিন্ন গবেষকেরা সময় উপস্থিত ছিলেন।

0 comments on “ইজারাদারদের হাতে ধুকছে কৃষিজমি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *