শসা চাষে লাভ এখন অনেক কম। সে কারণে দিন দিন খুলনায় কমে যাচ্ছে শসার চাষ। শসা ছেড়ে তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন খুলনার চাষিরা। খুলনায় শসা চাষের জন্য বিখ্যাত তেরখাদা উপজেলায় গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। ঘেরের আইলে উৎপাদিত মৌসুম ছাড়া উৎপাদিত তরমুজ চাষ বেশি লাভজনক।
শুধু তাই নয় তরমুজ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকেও। যার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজ উৎপাদন হচ্ছে প্রায় দশগুণ বেশি জমিতে।
খুলনার কৃষি অধিদপ্তরের সূত্র থেকে জানা যায় ডুমুরিয়া উপজেলার ব্যাপক পরিচিতি খুলনার শষ্যভান্ডার হিসেবে থাকলেও শসা উৎপাদনে সব সময় জেলার তেরখাদা উপজেলা এগিয়ে রয়েছে। দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে এখানকার শসা।
কিন্তু ক্রমাগত দাম কমে যাবার দরুন কৃষকরা শষা উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তাছাড়া সার ও কীটনাশক ব্যবহার করার কারণে মাটির উর্বরা শক্তি কমে যায়। এতে পানির ক্ষতি হওয়ায় মাছের উৎপাদনও কমে যায়।
কৃষি অফিস সূত্র অনুসারে, তেরখাদা উপজেলায় মাত্র দেড় একর জমিতে গতবছর তরমুজ উৎপাদন হয়। ভালো দাম পাবার ফলে এবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার তিন হেক্টর জমিতে মৌসুম ছাড়া তরমুজ এর চাষ হচ্ছে।
স্থানীয় অধিবাসীদের মতে শসার দাম কম হবার কারনে মাঝে মাঝে কৃষকরা শসা ডোবায় ফেলে দেয়।
আগাম চাষ করলেও যা দাম পাওয়া যায় তা উৎপাদন খরচের তুলনায় বেশি না। ফলে কৃষকরা তেরখাদায়ও মৌসুম ছাড়া তরমুজ চাষে ঝুঁকেছেন।
একজন কৃষক জানান, এবার তিনি ৬ বিঘা জমির বেড়িতে তরমুজ চাষ করেছেন। বিক্রিও শুরু করেছেন। যদিও দাম গতবারের তুলনায় একটু কম তবু্ও তাতে লাভ হচ্ছে।
পারের খালির একজন কৃষক বলেন,শসার চেয়ে তরমুজ চাষে লাভ বেশি। তাছাড়া সার আর কীটনাশক কম প্রয়োজন হয়। প্রায় একই কথা জানালেন অন্য কৃষকেরাও। নতুন করে উৎপাদন হওয়ায় কৃষি অফিস থেকে অনেক সহযোগীতা করা হচ্ছে তাদেরকে।
তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, কৃষকরা মৌসুম ছাড়া তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। এই ফলন শসার তুলনায় অনেক বেশি। শসা চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় সকলে। তাই শসা ছেড়ে এবার কৃষকরা মৌসুম ছাড়া তরমুজ চাষে বেশি আগ্রহী হয়েছেন।
এই কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, কৃষকদের তরমুজ চাষ করার জন্য সব ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে। তাদেরকে বীজ ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তরমুজে কীটনাশকের ব্যবহার খুব সীমিত হবার কারনে ঘেরের মাছের তেমন ক্ষতিও হচ্ছে না।