Tuesday, 02 December, 2025

শীতকালে সতর্কভাবে মাছের যত্ন নিতে হবে খামারিদের


মাছ চাষিরা শীত এলে খামারের মাছ নিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন। মাছ ঠান্ডায় খাদ্য গ্রহণ অনেকটা কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত খাদ্য এর কারণে পচে গিয়ে পুকুরে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে পানিতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয় এবং সর্বোপরি মাছের মৃত্যু ঘটে। তাই শীতকালে সতর্কভাবে মাছের যত্ন নিতে হয়।

মাছ আবদ্ধ পুকুরের ঠান্ডা পানিতে তাদের চলাচল কমিয়ে দেয়।

এতে মাছের মেটাবলিজম কমে যায় এবং ক্ষুধা কমে যায়।

আরো পড়ুন
গ্যাসের দাম বাড়লেও এর সঙ্গে সারের দামের কোনো সম্পর্ক নেইঃ কৃষি উপদেষ্টা

কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আজ (বুধবার) ঘোষণা করেছেন যে, গ্যাসের দাম বাড়লেও এর সঙ্গে সারের Read more

বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ১৭টি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ কীটনাশক এখনো ব্যবহার হচ্ছে
কীটনাশক স্প্রে করা কৃষক

বিশ্বজুড়ে 'অত্যন্ত বিপজ্জনক' হিসেবে চিহ্নিত কমপক্ষে ১৭টি কীটনাশক উপাদান বাংলাদেশে এখনও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা দেশের জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য Read more

অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে পানি ঠান্ডা থাকায়।

দিন ছোট হওয়ায় পুকুরের পানিতে রোদ অল্প সময় পড়ে।

এতে পানির তাপমাত্রা কমে যায় পুকুরের।

সাধারণত মাছের মেটাবলিজম বা পরিপাক ভালো হয় তাপমাত্রা ২৮-৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হলে।

এর কম হলে পরিপাক ক্রিয়া কমে যায় ও বৃদ্ধির হার কমে যায়।

অন্যদিকে সূর্যের আলো কম পাবার ফলে কমে যায় প্রাকৃতিক অক্সিজেন উৎপাদন।

ফলে মাছের শ্বাসকার্য চালাতে কষ্ট হয়, মাছ খাবি খেতে শুরু করে।

এবং সবশেষ অক্সিজেনের অভাবে মাছের মৃত্যু ঘটে।

তাছাড়া পুকুরের পানিতে অবস্থিত ফাইটোপ্লাঙ্কটন তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

যার দরুন পানিতে দ্রবীভূত কার্বনডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মাছ মরে যেতে পারে।

শীতকালে মাছের খামারের পরিচর্যা

পুকুরের পাড়ের উঁচু গাছপালা সমূহ পরিষ্কার রাখতে হবে।

এতে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে।

পানিতে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেনের বৃদ্ধি ঘটাতে হবে।

জাল টেনে, সাঁতার দিয়ে এবং বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে পানিতে অক্সিজেনের বৃদ্ধি ঘটাতে হবে।

বড় পুকুর বা ঘের হলে কৃত্রিম অক্সিজেন ট্যাবলেট প্রয়োগ করা যেতে পারে।

প্রতি ১০-১৫ দিন অন্তর পুকুরে জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য অবস্থা খেয়াল করতে হবে।

এছাড়া পুকুরের তলদেশের বিভিন্ন ক্ষতিকারক গ্যাস বের হয়ে যাবে জাল টানার ফলে।

সব ক্ষতিকর জলজ উদ্ভিদ অতিরিক্ত শ্যাওলা, ময়লা-আবর্জনা, কচুরিপানা, আগাছাসহ  পরিষ্কার করতে হবে।

পিএইচের মান অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে প্রতি একরে প্রয়োগ করতে হবে ২ লিটার ভিনেগার বা এসিডিন নামের এসিডিফায়ার।

এসআই রয়েল জিও প্রতি একরে ১৫-২০ কেজি প্রয়োগ করতে হবে পিএইচ একেবারে কমে গেলে।

পুকুরে উদ্ভিদকণা বৃদ্ধির জন্য অজৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।

বিশেষ করে ইউরিয়া ও ট্রিপল সুপার ফসফেট ৩ দিন ভিজিয়ে রেখে প্রয়োগ করতে হবে।

এছাড়াও প্রতি একরে ৩-৪ লিটার এসআই ফাইটোগ্রো কড়া রোদের সময় প্রয়োগ করা যেতে পারে।

শীতের সময় মাছের সুষম বৃদ্ধি বজায় রাখতে হবে।

মূল খাবারের মাছের হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতি কেজি খাদ্যের সাথে উৎকৃষ্টমানের উৎসেচক বা এনজাইম সমৃদ্ধ গ্রোথ প্রমোটর প্রয়োগ করা উচিত।

সাধারণত পুকুরে শীতে পানি কমে যায়।

তাই পানি প্রয়োজনমতো সরবরাহ করতে হবে।

পুকুরের পানি পরিবর্তন করতে হবে বেশি দূষিত হলে।

প্রয়োজনে ভালো মানের জীবাণুনাশক যেমন (এসআই ক্লোর-টি) ১টি করে ট্যাবলেট প্রতি শতাংশে এবং কপার সালফেট পেন্টাহাইড্রেট-১০% (এসআই ফাইটোক্লিন) ৩০ মিলিলিটার করে প্রতি শতাংশে প্রয়োগ করতে হবে।

0 comments on “শীতকালে সতর্কভাবে মাছের যত্ন নিতে হবে খামারিদের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ