রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন হচ্ছে। বিশেষ করে দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম ও ছোটভাকলা ইউনিয়নের পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন শুষ্ক মৌসুমেও বন্ধ হয়নি। থেমে থেমে হলেও ক্রমাগত ভাঙন চলছে। গত ১ মাসে বিলীন হয়েছে প্রায় ১৪০ একর কৃষিজমি। এসব এলাকার শতাধিক পরিবার চলে গেছে অন্যত্র। অন্যদিকে তিন ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবার ভাঙন-আতঙ্কে রয়েছে।
কৃষকেরা ফসল তোলার শঙ্কায় রয়েছেন
কৃষিজমি ভাঙছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট থেকে ছোটভাকলার অন্তার মোড় পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।
নদীর পাড়ের বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় দেবে গেছে।
জমিতে বর্তমানে শরিষা, ভুট্টা, করলা, টমেটোসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি রয়েছে।
ভাঙনের কারণে কৃষকেরা এসব ফসল তোলা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাহাজদ্দিন ব্যাপারী পাড়ার মজিবর মণ্ডল।
তিনি বলেন, বাপ-চাচার প্রায় ৬০ বিঘা জমি গত কয়েক বছরের ভাঙনে বিলীন হয়েছে।
কয়েক বছর ধরে নদীশাসন হবার কথা শুনলেও অথচ আজ পর্যন্ত তার খবর নেই।
বর্ষাকাল এলে পানিতে কিছু বস্তা ফেলা ছাড়া আর কিছু করা হয় না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় নতুন পাড়ার বাসিন্দা অনিক শেখ।
তিনি জানান যে, প্রতি বছরেই বর্ষাকালে নদী বেশিই ভাঙে।
কিন্তু এখন শুকনা মৌসুমেই ২০-২৫ দিন ধরে নদী বেশি ভাঙছে।
১ মাসে ১০০ বিঘার বেশি জমি বিলীন হয়েছে বলে জানান এই বাসিন্দা।
১ বছরে অন্তত ২০০ পরিবার অন্যত্র চলে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন তিনি নিজেও অন্যত্র যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নদী শাসন প্রয়োজন অতিস্বত্তর
দৌলতদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান মণ্ডল।
তিনি বলেন, তাঁর ইউনিয়নে ১ মাসে প্রায় ৫০ একরের বেশি কৃষিজমি বিলীন হয়েছে।
ভাঙন–আতঙ্কে ৫০টির মতো পরিবার অন্যত্র চলে গেছে বলেই জানান তিনি।
ভাঙন ঝুঁকিতে অন্তত ৫০০ পরিবার রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বারবার নদীশাসনের কথা আলোচনায় এলেও অগ্রগতি হয়নি।
চেয়ারম্যান আবদুর রহমান মণ্ডল অবিলম্বে নদীশাসনের উদ্যোগ গ্রহণ না করলে আরও অনেক ক্ষতি হতে পারে।
দেবগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম।
কাওয়ালজানি এলাকায় বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ১ মাসে এ এলাকার ৩০টি পরিবার ভাঙন–আতঙ্কে অন্যত্র চলে গেছে।
৫০ একরের মতো কৃষিজমি বিলীন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন ভাঙন–আতঙ্কে রয়েছে প্রায় ৩০০ পরিবার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খোকন উজ্জামান।
তিনি বলেন, দৌলতদিয়া থেকে ছোট ভাকলার অন্তার মোড় পর্যন্ত পদ্মা নদীর পাড়ে কৃষিজমি ভাঙছে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমি বিলীন হয়েছে।
এ–সংক্রান্ত তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে তিনি জানান।