‘ভাত’ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষের প্রধান খাদ্য। প্রক্রিয়াজাতকরণের পর ধান থেকেই তৈরি হয় ভাত। ধান চাষ করেন দেশের অধিকাংশ কৃষক। ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষক নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। ধান উৎপাদনে ক্ষতিকারক পাতা মোড়ানো পোকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে খেয়ে ফেলে
এ পোকা ধানের পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে।
এতে সাদা লম্বা দাগ দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্ত পাতায়।
পাতাগুলো পুড়ে যাওয়ার মতো দেখায় খুব বেশি ক্ষতি করলে।
ক্ষতিগ্রস্ত পাতার লালচে রেখা রোগও শুরু হতে পারে।
পূর্ণ বয়স্ক মথের পাখায় কমলা বাদামি রঙের রেখাবিশিষ্ট কালো দাগ থাকে।
এই কমলা রঙের রেখা হয় ঢেউ খেলানো।
শাড়ির পাড়ের মতো দেখা যায় মথের পাখা।
পাতার মধ্য শিরার কাছে পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী পোকা ডিম পাড়ে।
এই মথের কীড়াগুলো পাতার সবুজ অংশ খায়।
বড় হওয়ার সাথে সাথে পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে একটা নলের মতো করে।
কীড়াগুলো মোড়ানো পাতার মধ্যেই পুত্তলীতে পরিণত হয়।
অতিরিক্ত পরিমাণ নাইট্রোজেন ব্যবহার ক্ষতির কারণ
এ পোকার আক্রমণ হতে পারে জমিতে নাইট্রোজেন অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করলে।
এ পোকার আক্রমণের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয় বৃষ্টির পর টানা দু-তিনদিন প্রখর রৌদ হলেও।
আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে পাতা মোড়ানো পোকার পূর্ণবয়স্ক মথ ধরে দমন করা যায়।
জমিতে ডালপালা পুঁতে দিয়ে পাখি বসার স্থান তৈরি করা যায়।
এখানে বসা পাখি পূর্ণ বয়স্ক মথ ধরে খেয়ে ফেলে।
জমিতে চারা রোপণের পর প্রাথমিক ভাবে আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
অন্তত ৪০ দিন পর্যন্ত এটা আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
ধানের জমিতে আক্রান্ত গাছে শতকরা ২৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে রাসায়নিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।
এ পোকা দমন করতে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা উত্তম।
এছাড়া স্থানীয় কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিতে হবে।
তাদের পরামর্শে কীটনাশক ব্যবহার করে দমন করতে হবে।
তাছাড়া জমিতে অতিরিক্ত মাত্রায় ইউরিয়া সার বা এলোপাতাড়ি বালাইনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
বরং না বুঝে বিভিন্ন সার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
বাজারে অনেক নকল মানহীন কীটনাশকও পাওয়া যায়।
সেগুলো ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেক কৃষক।
তাই সেগুলোতে প্রতারিত না হয়ে কৃষি অফিসের পরামর্শে কীটনাশক ব্যবহার করা উত্তম।