সাতক্ষীরা অঞ্চলে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের বরবটি চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্থানীয় কয়েক শ কৃষক। লাল তীর ব্র্যান্ডের বীজের কারণে এমন ক্ষতির কথা বলছেন তারা। বীজ বপনের পর আড়াই-তিন মাস ধরে কৃষকেরা পরিচর্যা করলেও এখনো বরবটি গাছে কোনো ফুল বা ফলনও হয়নি। এতে ৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতির আশঙ্কা করছেন হতাশ হয়ে পড়া কৃষকেরা । উফশী জাতের বরবটি চাষে এমন ক্ষতি মেনে নিতে পারছেন না তারা।.
তরতাজা গাছে ফুল বা ফল নেই
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড় বাজার মুসলিম বীজ ভান্ডার থেকে প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা করে লাল তীর ১০৭০ উফশী জাতের বরবটি বীজ কেনেন। মে মাসের শেষের দিকে মাছের ঘেরের বেড়ির ওপর এসব বীজ লাগানো হয়। এভাবে ৩০০ বিঘা জমিতে এই বীজ রোপণ করেছেন অন্তত চার শতাধিক কৃষক । প্রয়োজনীয় পরিচর্যাও করে আসছেন তারা প্রায় তিন মাস ধরে। যদিও গাছ ভালো হয়েছে কিন্তু তাতে কোন ফুল আসছে না। কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিলেও তারা কোনো ফল পাচ্ছেন না।
জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কৃষকদের মারফত জানা যায়, বীজ রোপণের পর ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে গাছে ফুল ফোটে। এর কিছুদিনের মধ্যে বরবটির ফলনও পাওয়া যায়। বীজ রোপণের আড়াই থেকে তিন মাস পরও কোনো ফুল বা বরবটি ধরেনি গাছে।
সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান অভিযোগ করেন, ৫০০ গ্রাম লাল তীর উফশী জাতের বরবটির বীজ ৭৫০ টাকা দিয়ে কিনে দেড় বিঘা জমিতে মাছের ঘেরের বেড়িতে লাগান। তিন মাস ধরে পরিচর্যা করে তরতাজা গাছ পেলেও তাতে একটাও ফুল আসেনি। পরিচর্যা করতেই ইতিমধ্যে তাঁর ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৩০-৩৫ হাজার টাকার বরবটি বিক্রি করলেও এবছর পুরোটাই লোকসান।
বীজ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় বড় বাজারের মুসলিম বীজ ভান্ডারের মালিক মো. আকতার হোসেন এর কাছে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে লাল তীর কোম্পানির বীজ বিক্রির সঙ্গে জড়িত তিনি। কখনো কোন সমস্যা তিনি মোকাবেলা করেন নি। কিন্তু গত মে মাসে বীজের একটি চালান আসে, যাতে কৃষকদের সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করে আকতার হোসেন বলেন তিনি বিষয়টি কোম্পানিকে জানিয়েছেন। কোম্পানি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কৃষকদের তালিকা দিতে বলেছে।