দিন দিন পেয়ারা চাষ বাড়ছে নওগাঁ জেলায়। পেয়ারা চাষ বর্তমানে খুব লাভজনক। তাই এটি চাষে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি জমি বন্ধক নিয়েও পেয়ারা বাগান করেছেন কৃষকরা। তবে যে পরিমাণ পেয়ারা চাষ বাড়ছে কিন্তু সে পরিমাণ পেয়ারার বাগান নেই। যা রয়েছে তা স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পরেও জেলার বাইরে পাঠানো সম্ভব হয় না। এমনটাই জানিয়েছেন কৃষকরা।
চাষিরা জমি বন্ধক নিয়েও পেয়ারা চাষ করছে
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাওয়া তথ্য অনুসারে, জেলায় পেয়ারা বাগান রয়েছে ৪৪৭ হেক্টর জমিতে।
নওগাঁ সদর উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
শুধু তাই নয় নিয়ামতপুরে ১১৮ হেক্টর, মান্দায় ২২ হেক্টর, মহাদেবপুরে ৩০ হেক্টর এবং ধামইরহাটে ৭০ হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ করা হয়েছে।
একজন পেয়ারা চাষি আহাদ আলী জানান যে, বছরে ২০ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য জমি বন্ধক নিয়েছেন।
গত তিন বছর আগে বন্ধক নিয়ে জৈব ও রাসায়নিক সার দিয়ে জমি প্রস্তুত করে ৪৫০টি গাছ লাগান তিনি।
গাছ লাগানোর দেড় বছর পর থেকেই গাছে ফল আসা শুরু হয়েছে।
গত বছর সর্বোচ্চ ৩২০০ টাকা মণ বিক্রি করা হলেও এবছর ২২০০ টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত এ বাগান থেকে ১০ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছেন বলে তিনি জানান।
একই গ্রামের পেয়ারা চাষি ওমর ফারুক।
তিনি জানান যে, গত তিন বছর থেকে তিনি পেয়ারা চাষ করছেন।
২০ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে দুই বিঘা জমিতে পাঁচ বছরের জন্য পেয়ারার বাগান করেছেন।
তার বাগানে ৫৫০টি গাছ রয়েছে বলে জানান ওমর ফারুক।
পোকার কারণে পেয়ারার ফলন ব্যহত হতে পারে, এমনকি দামও কমে যায়।
৮-১০ দিন পরপর গাছে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়, যার দাম পড়ে ৭০০-৮০০ টাকা।
বর্তমানে প্রকারভেদে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-২২০০ টাকা হিসেবে।
কিন্তু পেয়ারার উৎপাদন বেশি হলে ৮০০-১০০০ টাকা প্রতি মণ বিক্রি হয়।
কৃষকরা জানান তারা যে পরিমাণ পেয়ারা উৎপাদন করেন তাতে জেলার চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল ওয়াদুদ।
তিনি জানান, পেয়ারা মৌসুমী ফলের মধ্যে বেশ পুষ্টিকর ফল।
ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই ফল লাভজনক হওয়ায় এর আবাদ প্রতি বছরই বাড়ছে।
বাজারে এখন দামও ভালো পাওয়া যায় বিধায়, পেয়ারা চাষে চাষিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।