বাগেরহাট বাংলাদেশের চিংড়ির স্বাদ ও মান বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে স্বাস্থ্যবিধি ও পরিবেশসম্মত উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, শুধু আকার বা স্বাদ নয়, বরং চিংড়ির স্বাস্থ্যমান ও অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত অবস্থা এখন বৈশ্বিক বাজারে অত্যন্ত কঠোরভাবে যাচাই করা হয়। তাই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারকদের অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করতে হবে।
গতকাল সকালে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন এবং আড়তদারদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অবৈধ পথে পণ্য আমদানিতে কঠোর হুঁশিয়ারি
ঢাকা গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে বাংলাদেশ কাঁচা পাট রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করায় গভীর সংকটের মুখে পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চটকলগুলো। Read more
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পালং শাক একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও লাভজনক শীতকালীন সবজি। অল্প সময়ে, কম পুঁজিতে এবং সীমিত জমিতে এটি চাষ Read more
সীমান্ত দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে অবৈধ পথে পণ্য আসা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “ভারতসহ বাইরের দেশ থেকে অবৈধভাবে পণ্য আসা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে সরকার রাজস্ব হারায় এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ন্যায্য লাভ থেকে বঞ্চিত হন। অনেক ক্ষেত্রে এসব পণ্য শেষ পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়, যা জাতীয় সম্পদের অপচয়। এই অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মৎস্য খাতে বিদ্যুৎ সুবিধা ও নীতিগত সংস্কার
মৎস্য খাতের সংকট নিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, কৃষিখাত ভর্তুকিযুক্ত বিদ্যুৎ সুবিধা পেলেও মৎস্য খাত এখনো তা থেকে বঞ্চিত। তবে বর্তমান সরকার গত এক বছর ধরে এ বিষয়ে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই খাতে প্রায় ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের নীতিগত ত্রুটির কারণে দেশের চিংড়ি রপ্তানি খাত পিছিয়ে পড়েছে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে পোনা আহরণে আইনি সীমাবদ্ধতা থাকায় পোনা উৎপাদন বাড়াতে দেশে হ্যাচারির সংখ্যা বৃদ্ধি করা জরুরি। রপ্তানি বাণিজ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
নিরাপত্তা ও নির্বাচন প্রসঙ্গ
এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এই ঘটনার সাথে যে পক্ষই জড়িত থাকুক না কেন, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে।” তিনি আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। এছাড়া আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে আয়োজনের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ প্রস্তুতির কথা তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন।
উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাসসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
