Friday, 19 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

কাশবন উপড়ে কৃষিকাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ফরিদপুরের শীপু


কাশবনে ছেয়ে গিয়েছিল ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের মাথাভাঙ্গা গ্রামের পদ্মার পাড় এলাকা। এ কাশবন ভেঙে অবসর সময় কৃষিকাজে লাগিয়েছেন এক অফিস তত্বাবধায়ক।  পদ্মার চরে প্রায় সাড়ে চারশত বিঘা অনাবাদি জমির কাশবন উপড়ে কৃষিকাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। সেই নিষ্ফলা জমিতে কৃষি কাজ করছেন। শত শত মণ ধান, সরিষা, মসুর ও মাসকালাই উৎপাদন করছেন।

রেজাউল হায়াত শীপু চরাঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন।

আরো পড়ুন
ইলিশ দিয়ে প্রথমবারের মত কৌটাজাতকৃত খাদ্য তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন
ইলিশের কৌটাজাতকৃত খাদ্য তৈরি

ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। এই মাছ স্বাদে অতুলনীয় ও গন্ধের জন্য দেশ ও বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এই অতুলনীয় Read more

করলার লাভজনক চাষ পদ্ধতি
লাভজনক করলা চাষ

করলার লাভজনক চাষ চাষ পদ্ধতি করলার ইংরেজি নাম Gourd, আমাদের দেশে করলা গ্রীষ্মকালীন সবজি হলেও বর্তমানে করলা বার মাসই বাজারে Read more

এই উপজেলার বিএস ডাঙ্গী গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউদ্দিন খালাসীর পুত্র শীপু।

অফিস তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে শিপু ফরিদপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকরি করেন।

ফরিদপুর বিএডিসির ডাল ও তৈলবীজ খামারের উপ-পরিচালকের পরামর্শে এবং ‘একখণ্ড জমিও অনাবাদী থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণায় উদ্ধুদ্ধ হন তিনি।

সেখান থেকেই পদ্মার চরের কাশবন ভেঙে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন তিনি।

রেজাউল হায়াত শীপু বলেন, বর্তমানে তার বাড়ি উপজেলা সদরে।

তিনি বলেন তার পুরাতন বসতভিটা ঘিরে মাথাভাঙ্গা গ্রামে পদ্মার পাড়ে বিশাল চর জেগে ওঠে।

প্রায় ৩০ বছর ধরে কাশবন বেষ্টিত প্রায় ওই চর জঙ্গলা-অনাবাদি জমি হিসেবে পড়ে ছিল।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও ফরিদপুর বিএসডিসি’র উপ-পরিচালক তাকে পরামর্শ দেন।

তার পরামর্শে ২০২০ সাল থেকে কাশবন উপড়ে ফেলে নিষ্ফলা জমিগুলো আবাদযোগ্য করে গড়ে তুলেছেন।

প্রথমে মেশিন দিয়ে বিশাল কাশবন জঙ্গলমুক্ত করে নেয়া হয় বলে জানান তিনি।

তারপরে বড় ট্রাক্টর দিয়ে পর পর চার দফায় চাষ দেয়া হয়। এতে জমিগুলো আবাদযোগ্য হয়।

বন-জঙ্গল পরিষ্কার ও দেড়শত একর জমি আবাদযোগ্য করে গড়ে তুলতে প্রায় ৮ থেকে ৯ মাস লেগেছে।

এতে তার প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

এছাড়া নিয়মিত তিনজন দিন মজুরকে মাসে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে জমিগুলো পরিচর্চা কাজে লাগানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ২৫০ বিঘা জমিতে মাসকলাই চাষ করা হয়।

তাছাড়া ১১০ বিঘাতে মসুর, ৫০ বিঘায় সরিষা ও ২৫ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকার তিল বীজ বিক্রয় করেছেন।

একই সাথে ৪ লাখ টাকার কলাই, ২ লাখ টাকার মসুর ও ২ লাখ টাকার ধানসহ মোট প্রায় পৌনে ১২ লাখ টাকার ফসল বিক্রি করেছেন।

আর এ বছরের ফসলগুলো ঘরে তুলতে পারলে তিনি লাভের মুখ দেখবেন।

এছাড়া তিনি ফসলী মাঠ ঘেঁষে একটি গরু ও ছাগলের ফার্ম গড়েছেন।

সেই ফার্মে ৩৫টি ছাগল ও ৮টি গরু রয়েছে তার।

মো. রেজাউল হায়াত শীপু জানান যে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পদ্মার চরাঞ্চলে পড়ে থাকা আরও অনেক কাশবন আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ মণ্ডল এর সাথে কথা বলা হয়।

তিনি জানান, ইতিমধ্যে উপজেলার অনেকেই পদ্মার চরে নিষ্ফলা কাশবন ভেঙে আবাদযোগ্য করে তুলছেন।

এই কর্মকর্তা বলেন কৃষকদের ব্যাংক লোন সহায়তা, সঠিক পরামর্শ ও অফিসিয়াল যাবতীয় সহায়তা করছেন তারা।

0 comments on “কাশবন উপড়ে কৃষিকাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ফরিদপুরের শীপু

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *