অনাবৃষ্টিতে ফুল ঝরে গিয়েছিল কমলার। এতে কমলার ফলনে সাময়িক বির্পযয় দেখা দিয়েছিল। তবে এখন আর সে বিপর্যয় নেই, হয়েছে আশানুরূপ ফলন। মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা জুড়ী। এই এলাকার লাটিটিলা বনভূমির লালছড়া, রূপা ছড়া, শুকনা ছড়ার টিলায় টিলায় বিভিন্ন কমলার গাছ এর সমারোহ দেখা যায়। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে সবুজ কমলা ঝুলছে। কিন্তু সাফারি র্পাক নির্মাণের ঘোষণায় কমলার ফলনেও হতাশ চাষিরা। হতাশায় পড়ে বাগানের পরিচর্যায় মন দিচ্ছেন না তারা।
কমলা চাষে ভাল ফলন
সুদুর চীন দেশ ও বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক চাষ হয় বলে ফলটির নামকরণ নাগপুরি, খাসি, ছাতকী, চায়নিজ কমলা। তবে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে বিভিন্ন জাতের কমলা চাষ হচ্ছে। চলতি বছর বৃষ্টির অভাব ছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত সেচ দেওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে কমলার।
উপজেলার জুড়ী উপজেলার মুর্শেদের বাড়ির চার পাশে টিলার ঢালে সারি সারি কমলা গাছ দেখা যায়। দেখা যায় গাছভর্তি ফল। সেখানে স্থানীয় জাতের কমলার পাশাপাশি বেশ কিছু চায়নিজ কমলার গাছ রয়েছে।
বঝি টিলার জয়নুল মিয়া ও লাল টিলার মুর্শেদ মিয়া জানান দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জাতের কমলার চাষ করছেন তারা। স্থানীয় জাতের দুই শতাধিক কমলা গাছ রয়েছে তাদের দুটি বাগানে ।
কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০০১ সালে এ এলাকায় নতুনরূপে কমলা চাষ শুরু হয়।
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার একটি নার্সারি থেকে মুর্শেদ মিয়া ১৮০টি চায়নিজ কমলাগাছের চারা কিনে আনেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন েএর সাথে কথা বলে জানা যায়, কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে থাকা বাগানগুলোতে তেমন সমস্যা হয়নি। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির অভাবে ফুল ঝরে গিয়ে কিছুটা ক্ষতি হলেও আশানুরূপ ফলন হবে।
কমলা চাষি মানিক মিয়া ও তার স্ত্রী ছালেহা বেগম জানান যে কিছুদিন পর দেশি জাতের কমলা বা
গানের গাছ থেকে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হবে। তাদের দুটি কমলাবাগানে ৩০০ গাছে কমলার ফুল ঝরে গেলেও ভালো ফল এসেছে। তবে সাফারির্পাক নির্মাণের খবর শুনে শঙ্কায় আছেন তারা।
সাফারিপার্ক নির্মাণের খবরে হতাশায় এলাকার পুরুষরা কমলার পরিচর্যা ছেড়ে দিয়েছেন।সাফারি পার্ক হলে কমলা বাগান থাকবে কিনা তা নিয়ে তারা সন্দিহান।
চাষিরা জানান, দেশি জাতের কমলা আকারভেদে ১০০ কমলা এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় পাইকারি হারে বিক্রি হয়। এখান থেকে কমলা কিনে নেন সিলেট, কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও চট্টগ্রামের ফলের আড়তদারেরা।
মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক জানান, কমলা চাষিদের উদ্বুদ্ধ করেছেন তিনি। তিনি জানান কমলা চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে জুড়ী, বড়লেখা, কুলাউড়া উপজেলায়। তিনি আরও বলেন কৃষি অধিদপ্তর কমলা চাষিদের তারা পরামর্শ দিয়ে, সহযোগিতা দিয়ে আসছে।