কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টা থেকে তেল উৎপাদন করতে পারলে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা অনেক হ্রাস পাবে। একইসাথে ভুট্টাচাষিরা অনেক লাভবান হবে ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়ক হবে।
কৃষিমন্ত্রী ভুট্টার তেল উৎপাদনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং এ ব্যাপারে সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নাসির স্টার্চ, অয়েল অ্যান্ড অ্যানিমেল ফিড ইন্ড্রাস্টিজ লিমিটেড পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে শিল্প-কারখানা স্থাপন করে বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টার তেল উৎপাদন করতে পারলে একদিকে যেমন বিদেশ থেকে তেল আমদানি হ্রাস পাবে অন্যদিকে তেলের দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে দেশের কৃষক লাভবান হবে। পাশাপাশি দেশের মানুষের পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়ক হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো: এছরাইল হোসেন, নাসির গ্লাসওয়্যার অ্যান্ড টিউব ইন্ড্রাস্টিজ লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মো: ফজলুল রহমান, ডিজিএম মো: কাজিমুল বাশার প্রমুখ।
গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে ভুট্টা নতুন সম্ভাবনময় ফসল। বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু ভুট্টা চাষের অনুকূল। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতেও ভুট্টার ভাল ফলন হচ্ছে। কৃষকদের কাছেও ভুট্টা চাষ জনপ্রিয়তা লাভ করছে। ফলে ভুট্টার উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে দেশে ভুট্টা চাষের মোট আবাদি জমি ৫.৫ লক্ষ হেক্টরেরও অধিক আর উৎপাদন ৫৪ লক্ষ মে. টন। উন্নত দেশে ভুট্টার বহুমুখী ব্যবহার থাকলেও দেশে শুধু প্রাণি, পোল্ট্রি ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত ভুট্টার অধিকাংশই (৯৫%) প্রাণি, হাঁস-মুরগির ফিড ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে, ইদানিং খই ভুট্টা, মিষ্টি ভুট্টা (৫%) হিসেবেও মানুষের খাদ্য হিসেবে বেশ গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে।
গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো: এছরাইল হোসেন বলেন, দেশে বর্তমানে উৎপাদিত ৫৪ লক্ষ টন ভুট্টা থেকে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টন ভুট্টাতেল প্রতি বছর আহরণ করা সম্ভব যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। ভুট্টাতেল তৈরির পাশাপাশি ভুট্টা থেকে কর্ণ ফেক্স, কর্ণ চিপস্ তৈরি করাও সম্ভব।