
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বগুড়ার বাজারগুলোতে উঠেছে নতুন আলু। উৎসবের আমেজে এই আলুর চাহিদা এখন তুঙ্গে। তবে বাজারে প্রথম আসায় এর দাম রয়েছে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। বগুড়ার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি নতুন লাল পাকড়ি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বগুড়া শহরের রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার, শিবগঞ্জের উথলী, নন্দীগ্রাম, আদমদীঘিসহ অন্যান্য নবান্নের বাজারে খোঁজ নিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।
চড়া দামে কিনছেন উৎসবের টানে
বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমদানি কম হলেও নবান্নের কারণে নতুন আলুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ প্রচুর। দাম আকাশছোঁয়া হলেও উৎসব পালনের জন্য কম-বেশি সবাই এই আলু কিনছেন। এসব আলু আকারে ছোট এবং মাঝারি সাইজের।
শিবগঞ্জ উপজেলার উথলী নবান্নের মেলায় নতুন আলু কিনতে আসা ধোন্দাকোলা গ্রামের সত্যেন্দ্রনাথ দাস জানান, “নবান্ন উপলক্ষে বেশি দাম দিয়েই নতুন আলু কিনতে হচ্ছে। নতুন বলে কথা, তাই ১০০ গ্রাম কিনেছি ৫০ টাকা দিয়ে।”
একইভাবে নারায়ণপুর গ্রামের কালিপদ মোদক বলেন, “নবান্নে সব কিছুই নতুন দিয়ে করতে হয়। তাই বাধ্য হয়েই আড়াই শ গ্রাম নতুন আলু ১০০ টাকা দিয়ে কিনেছি।”
ফতেহ আলী বাজারে আসা ক্রেতা কল্যাণ চন্দ্র ভৌমিক জানান, “প্রতিবছর আমাদের পরিবারে নবান্ন উৎসব হয়। এই উৎসবে নতুন ধানের চাল, নতুন আলুর প্রয়োজন। দাম বেশি হওয়ায় ১০০ গ্রাম কিনেছি ৪০ টাকায়। উৎসবের কারণে দাম বেশি হলেও কিনতে হলো।”
চাহিদার কারণ: ঐতিহ্য আর আপ্যায়ন
জানা যায়, সনাতনী পঞ্জিকানুসারে পহেলা অগ্রহায়ণ নবান্ন অনুষ্ঠিত হয়। আবহমানকাল থেকে এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে এদিন নবান্ন উৎসব পালন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এই উৎসবে নতুন শাক-সবজি ও ফলমূলের পাশাপাশি নতুন আলু একটি অপরিহার্য উপকরণ।
নবান্ন উপলক্ষে পরিবারে আত্মীয়-স্বজনদের আপ্যায়ন করা হয়, আর খাদ্য তালিকায় মাছের সাথে নতুন আলুর পদ থাকা প্রায় বাধ্যতামূলক। এই কারণেই বাজারে নতুন আলুর চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়।
মেলায় আলু বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান, “বাজারে নতুন আলু উঠেছে। আকারে খুব বড় না হলেও নবান্ন উৎসবের কারণে ভালো দাম পাওয়ার জন্য কৃষকরা তাড়াতাড়ি বিক্রি করছেন। তাই আমাদেরও বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

