করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত চলমান নিষেধাজ্ঞাকালে জরুরি খাদ্য পরিবহনে কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম অত্যাবশ্যকীয় ও পচনশীল দ্রব্য। এগুলো উৎপাদন, পরিবহণ ও বিপণণে কোনভাবেই বাধা থাকবে না। এ ব্যাপারে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থায় চিঠি দিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে মাছ, হাঁস-মুরগি, গবাদিপশু, দুধ, ডিম, মাছের পোনা, মুরগির বাচ্চা, পশু চিকিৎসা সামগ্রী, টিকা, কৃত্রিম প্রজনন সামগ্রী, মৎস্য ও পশু খাদ্য, ঔষধ ইত্যাদি পরিবহণ ও বিপণন কার্যক্রম নিশ্চিতকরণ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর করোনা পরিস্থিতি গতবছরের চেয়ে আরো ভয়াবহ। তবে এসময় আতঙ্কিত হয়ে একেবারে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। আমরা সবকিছু বন্ধ করে দিলে দেশ চলবে না। মানুষের মাছ, মাংস, দুধ ডিমের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে না।
আবার উৎপাদক, খামারি, বিপণনকারীসহ এ খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গতবছর এ খাতের সংকট উত্তরণে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, পরিবহনের বাধা দূর করা হয়েছে। বন্দরে মৎস্য ও প্রাণী খাদ্য ছাড়করণেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এবছরও প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্য ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে। উদ্ভূত সংকট মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম চালু করা হবে।’
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘বিগত বছর করোনার মধ্যে আপনাদের পরিশ্রম ও আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার ভাবমূর্তি দেশবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে।
করোনাকালে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত একটি বড় খাত। এজন্য এ খাতের উৎপাদন, পরিবহণ ও বিপণন অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে।
করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কোনভাবেই যেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত নুয়ে না পড়ে। এ খাত নুয়ে পড়লে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। কারণ পুষ্টি ও আমিষের বড় যোগান আসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত থেকে। এ খাতের যে সুনাম গতবছর হয়েছিল, সেটা যেন কোনভাবে বিপন্ন না হয়। দায়িত্বের জায়গা সম্মিলিতভাবে গ্রহণ করতে হবে, এককভাবে নয়। এ ব্যাপারে কোনরূপ শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ নেই।’
এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ্ মোঃ ইমদাদুল হক ও শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ শেখ আজিজুর রহমানসহ মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এ ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণ করেন।
এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের সাথে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ও জেলা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের তৎপর থাকার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
উপজেলা কর্মকর্তাদের সাথে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রক্ষা এবং মনিটরিং এর জন্যও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এ সময় নির্দেশ দেন মন্ত্রী। মাঠ পর্যায়ের উদ্ভুত সমস্যাগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা এবং নিয়মিত কঠোর মনিটরিং এর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এসময় নির্দেশ দেন মন্ত্রী।