Friday, 29 March, 2024

সর্বাধিক পঠিত

গরু মোটাতাজাকরন লাভ কেমন ?

চাষির প্রশ্নCategory: গবাদি পশু ও পাখি পালনগরু মোটাতাজাকরন লাভ কেমন ?
জেমস asked 3 years ago

করোনার কারনে বেকার বসে আছি। গরু মোটাতাজাকরন খামার করতে চাই । গরু মোটাতাজাকরন লাভ কেমন ?

1 Answers
এগ্রোবিডি২৪ Staff answered 3 years ago

গরু মোটাতাজাকরণ: কেন করবেন, কীভাবে করবেন ?

কৃষিভিত্তিক এ বিশাল বাংলায় সম্ভাবনার শেষ নেই। প্রাসঙ্গিক সুবিধাদির শেষ নেই। প্রয়োজন শুধু আমাদের আন্তরিক পরিকল্পনা আর কার্যকরী বাস্তবায়ন। এরই এক চিলতে গরু মোটাতাজাকরণ। এ কৌশলটি কাজে লাগিয়ে আমরা অনেকটুকু এগিয়ে যেতে পারি। বাংলাদেশে গরুর মাংস একটি প্রিয় খাদ্য। প্রতি বছর ৬-৭ লাখ টন গরুর মাংস উৎপাদন হয়। এর পুরোটারই উৎস গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থা।

বাংলাদেশে গরুর মাংস উৎপাদনের বৈজ্ঞানিক খামার হাতেগোনা দু’একটি ছাড়া আর নেই। কিন্তু প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে এবং বর্তমান প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে গরু মোটাতাজাকরণ হতে পারে বিকল্প উপায়। যে কারণে এটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আমাদের দেশের গরুগুলো এমনিতেই তেমন স্বাস্থ্যবান না। এর কারণ হচ্ছে আমাদের দেশে তেমন কোনো উন্নত জাত নেই। যদিও রেড চিটাগাং গরুকে জাত হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারপরও আমরা বেশ পিছিয়ে। কিন্তু আমরা যদি আমাদের যেসব গরু আছে তাদেরকে বিশেষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মোটাতাজা করতে পারি তাহলে লাভ হবে আমাদেরই।

সে কারণে অধিক মাংস উৎপাদনের জন্য কম সময়ে স্বাস্থ্যহীন কৃশকায় গরুকে স্বাস্থ্যবান, শক্তিশালী গরুতে রূপান্তর করাকে গরু মোটাতাজাকরণ বলে। গরু মোটাতাজাকরণ একটি লাভজনক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় গরু বাছুরকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় খাবার খাইয়ে মোটাতাজা বা মাংসবহুল করে বাজারজাত করা হয় এবং এতে লাভবান হওয়া যায়।

গরু মোটাতাজাকরণে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হয় তা হলো- গরু নির্বাচন, গরুর জন্য উপযুক্ত বাসস্থান তৈরি, গরুকে কৃমিমুক্তকরণ, গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চলমান চিকিৎসা এবং গরুর জন্য নিয়মিত ও পরিমিত সুষম খাদ্য সরবরাহ। গরু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণত দেড় থেকে দুই বছরের এঁড়ে বাছুর কেনা ভালো। আর সংকর জাতের হলে আরো ভালো হয়। মোটাতাজা করার জন্য যে গরু নির্বাচন করা হবে সেগুলো পুরুষ হলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এজন্য যে গরুগুলোর বুক চওড়া ও পাঁজরের হাড় চ্যাপ্টা, কোমরের দু’পাশ প্রশস্ত উঁচু, লম্বা ও প্রশস্ত কপাল, শুকনা কিন্তু রোগমুক্ত, গায়ের চামড়া রোগমুক্ত এবং গরুর দাঁত উঠেছে কি না সেটা দেখে কিনতে হবে।

বাসস্থানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি গরুর জন্য ৮ ফুট লম্বা এবং ২ মিটার প্রস্থ হিসেবে জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরের চালা যাতে গরম না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি ঘরের মেঝে একদিকে ঢালু করতে হবে যাতে গরুর মলমূত্র গড়িয়ে নালা দিয়ে সহজেই বের হতে পারে। এজন্য ঘরের পেছনে ১ হাত চওড়া এবং ৪ ইঞ্চি গভীর নর্দমা তৈরি করে রাখতে হবে। প্রতিদিন অন্তত দু’বার গরুর বাসস্থান পরিষ্কার করতে হবে।

এছাড়া গরু সংগ্রহের পর অবশ্যই কৃমিমুক্ত করতে হবে। এজন্য গোবর সংরক্ষণের সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। তারপর গোবর পরীক্ষা করে নির্দিষ্ট প্রজাতির কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে। কেননা গরুর পেটে কৃমি থাকলে তা পশুর ত্বকে বাস করে রক্ত চুষে খেয়ে গরুকে দুর্বল করে দেয়। এজন্য গরুর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে। আর প্রয়োজন সুষম খাবার সরবরাহ করা। গরু মোটাতাজাকরণে বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়। সেগুলো হলো-
১. অল্প সময়ে গরুকে মোটাতাজা করে অধিক মূল্যে বাজারজাত করা যায়;
২. কম সময়ে লাভসহ মূলধন ফেরত পাওয়াও সম্ভব হয়;
৩. অধিক মাংস উৎপাদনের মাধ্যমে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ করা যায়;
৪. আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা;
৫. স্বাস্থ্যহীন গরুকে মোটতাজা ও শক্তিশালী করা সম্ভব।

এছাড়া অন্যান্য সুবিধার মধ্যে যেসব আছে তাহলো-
মূলধন কম লাগে, আর্থিক ঝুঁকি কম, বেকারত্ব কমে যায়, বেশি জমির প্রয়োজন পড়ে না, দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না।
আর প্রয়োজন সুষম খাবার সরবরাহ করা। কোরবানির হাটগুলো দেশি গরু দিয়ে ভরা থাকে। এসব গরুর বেশির ভাগই মোটতাজাকরণ প্রক্রিয়ার ফসল। গরু মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া প্রমাণ করেছে যে এটি একটি লাভজনক ফসল। বাংলাদেশের বর্তমান পশু উৎপাদন ব্যবস্থাকে বিবেচনায় রেখে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণ প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। এ পদ্ধতিতে লিঙ্গের কোনো মতভেদ নেই। ষাঁড়, বলদ, পুনোরুৎপাদন ক্ষমতাহীন গাভী অথবা উঠতি বয়সের এঁড়ে বাছুর এ প্রক্রিয়ায় ব্যব‎‎হৃত হয়ে থাকে।

দৈনিক খাদ্য তালিকা

গরু মোটাতাজা করার জন্য ১৫০ থেকে ২শ’ কেজি ওজনের একটি গরুকে প্রতিদিন ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক ৩শ’ গ্রাম, খড় ৪ কেজি, সবুজ কাঁচাঘাস ১২ কেজি আর দানাদার খাদ্য ৩ কেজি, চালের কুঁড়া ১ কেজি, গমের ভুসি ১.২৫ কেজি, তিলের খৈল ৪শ’ গ্রাম, হাড়ের গুঁড়া ৫০ গ্রাম, লবণ ৫০ গ্রাম, ঝোলাগুড় ২৫০ গ্রাম এবং পানি পর্যাপ্ত পরিমাণ খাওয়াতে হবে। এছাড়া যদি ইউরিয়া প্রক্রিয়াজাত খড় খাওয়ানো হয় তবে সেক্ষেত্রে তা ৩ থেকে ৪ কেজি হবে। গরু মোটাতাজাকরণ প্রযুক্তি ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কারণ অল্প সময়ে অল্প পুঁজি দ্বারা এ পদ্ধতিতে বেকারত্ব দূরীকরণ অথবা মূল আয়ের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের এটি একটি চমৎকার মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরি পদ্ধতি

ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরিতে যেসব উপকরণ লাগে তা হলো- গমের ভুসি ৩ কেজি, ঝোলাগুড় ৬ কেজি, ইউরিয়া ৯০ গ্রাম, লবণ ৩৫ গ্রাম, ৫শ’ গ্রাম খাবার চুন এবং কাঠের ছাপ। এগুলো সংগ্রহ করে সামান্য ভিটামিন ও খনিজ লবণ মিশ্রণ একটি লোহার কড়াইতে চিটাগুড়সহ জ্বাল দিয়ে সামান্য ঘন করতে হবে। কড়াই চুলা থেকে নামিয়ে কড়াই এর মধ্যস্থ চিটাগুড়ে ইউরিয়া, চুন, লবণ, ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ এবং ভুসি দিয়ে ভালো করে মেশাতে হবে। তারপর ছাঁচের মধ্যে কিছু ভুসি ছিটিয়ে মিশ্রিত দ্রব্যগুলো ভরে ব্লক তৈরি করতে হবে। ১টি গরুকে দৈনিক ৩শ’ গ্রাম ব্লক জিভ দিয়ে চেটে চেটে খেতে দিতে হবে অর্থাৎ ১টি ব্লক একটি গরুকে ৩ দিন খাওয়াতে হবে। প্রথমে ব্লক চাটতে না চাইলে ব্লকের ওপর সামান্য ভুসি ও লবণ ছিটিয়ে দিলে আস্তে আস্তে চাটার অভ্যাস হবে।

গরু মোটাতাজাকরণে কেমন লাভ ও সুবিধাদি

গরু মোটাতাজাকরণ একটি লাভজনক ব্যবসা। গরু মোটাতাজাকরণ প্রযুক্তি ব্যবহারে একজন খামারি প্রতি গরু হতে ৩-৪ হাজার টাকা হতে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভবান হতে পারেন। তবে লাভের মাত্রা নির্ভর করে প্রযুক্তির ৪টি পর্ব যেমন- পশু নির্বাচন, কৃমি মুক্তকরণ, খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং বাজারজাতকরণের ওপর। এছাড়া আরো যদি পরামর্শ ও সমস্যা সমাধানে আপনার কাছের উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করলে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায়। স্বল্প সময়ে গরু মোটাতাজা করে অধিক মূল্যে বাজারে বিক্রয় করে স্বল্প সময়ে মুনাফা অর্জন করা যায়। স্বল্প সময়ে লাভসহ মূলধন ফেরৎ পাওয়া যায় এবং ঋণের টাকা স্বল্প সময়ের মধ্যে শোধ করা যায়। প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণ হয়ে থাকে। বেকারত্ব দূর হয়; আর্থিক ঝুঁকি কম থাকে; স্থানীয় বাজার থেকে অনায়েসে পশু কিনে কাজ করা যায়; স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত খাদ্যদ্রব্যের সাথে বাড়ির উচ্ছিষ্ট খাদ্য দ্রব্যাদির সদ্ব্যবহার করা যায়।

গরু মোটাতাজাকরণের মেয়াদকাল
৪ মাস মেয়াদি; ৬ মাস মেয়াদি; ১ বছর মেয়াদি।

মোটাতাজাকরণ প্রযুক্তি

গরু নির্বাচন। কৃমিমুক্তকরণ। পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা। বাজারজাতকরণ।
গরুর বয়স ও নির্বাচনের বৈশিষ্ট্য: মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়ায় পশুর বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণত ২-৩ বছরের গরু নির্বাচন করা যেতে পারে। দৈহিক গঠন বয়সের তুলনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-
১. দৈহিক আকার বর্গাকৃতির হবে;
২. গায়ের চামড়া ঢিলা, ঘাড় চওড়া এবং খাটো;
৩. পাগুলো খাটো এবং সোজাসুজিভাবে শরীরের সাথে যুক্ত এবং পায়ের গিঁরা মোটা সোটা;
৪. পিছনের অংশ ও পিঠ চওড়া এবং লোম খাটো ও মিলানো;
৫. গরু অপুষ্ট এবং দুর্বল কিন্তু রোগা নয় এবং বাহ্যিক ত্রুটিবিহীন;
৬. পাকস্থলিতে পেরিস্টাল মুভমেন্ট থাকতে হবে;
৭. গায়ের রঙ লাল বা কালো;
৮. বুকের বেড় : ৫০ থেকে ৬০ ইঞ্চি।
৯. গরু নির্বাচনপূর্বক সংগ্রহের পর পরই পালের সব গরুকে এক সাথে কৃমিমুক্ত করা উচিত। এ ব্যাপারে প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ অনযায়ী কাজ করতে হবে।

পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা
গরু মোটাতাজাকরণের মোট খরচের শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগই খাদ্য ও পুষ্টির সাথে জড়িত। খাদ্য খরচ কমাতে না পারলে গরু মোটাতাজাকরণকে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা কঠিন। কম খরচে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহের জন্য অনুসরণীয় বিষয়গুলো হচ্ছে-
১. স্বল্পমূল্যে সহজপ্রাপ্য খাদ্য দ্বারা রেশন তৈরি;
২. প্রাপ্ত খাদ্যগুলো প্রয়োজনমতো প্রক্রিয়াজাতকরণ;
৩. উৎপাদন মৌসুমে খাদ্য সংগ্রহের মজুদ;
৪. পশুর প্রয়োজনের ভিত্তিতে দৈনিক খাদ্য তালিকা প্রস্তুত;
৫. খাদ্য সরবরাহ পদ্ধতি নির্বাচন;
৬. খাদ্যজনিত রোগ দমনের ব্যবস্থা।
আমাদের দেশে প্রাপ্ত আঁশজাতীয় খাদ্যের মধ্যে ৭০ শতাংশই খড়। ঋতু ও অঞ্চলভেদে দেশি ও উন্নত জাতের সবুজ ঘাসও পাওয়া যায়। মোটাতাজাকরণে দু’ধরনের আঁশজাতীয় খাদ্য ভিন্ন ভিন্ন বা এক সাথেও ব্যবহার হতে পারে। তবে উভয় প্রকার খাদ্যই প্রক্রিয়াজাত প্রয়োজন। ইউএমএস প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তির খড় ঃ পানি ঃ মোলাসেস হবে = খাদ্যমাত্রা হবে ইচ্ছামতো। এ ক্ষেত্রে অসুবিধা হলো ৩ দিনের বেশি সংরক্ষণ করা যায় না। সাবধানতা প্রস্তুত অনুপাত সঠিকভাবে অনুসরন করতে হবে।
গরু মোটাতাজাকরণে কয়েকটি খাদ্য ফরমুলা

খড়ভিত্তিক খাদ্য ফরমুলা
ইউএমএস যথেচ্ছ পরিমাণ + দানাদার মিশ্রণ। (দৈনিক ওজনের শতকরা ১ ভাগ)
সবুজ ঘাসভিত্তিক খাদ্য ফরমুলা : সবুজ ঘাস + দানাদার মিশ্রণ । ( দৈহিক ওজনের শতকরা ১ ভাগ)
দৈহিক ওজন গ্রহণ: (বুকের বেড় x বুকের বেড়) x দৈর্ঘ্য /৩০০ = পাউন্ড / ২.২ = কেজি জীবন্ত গরুটির ওজন।
গরু মোটাতাজাকরণ একটি সহজ সরল কম পুঁজিতে বেশি লাভজনক কার্যক্রম। পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও চলে। শুধু প্রাথমিকভাবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে কাজ করলে লাভবান হওয়া যায়। এক্ষেত্রে পুঁজি কম লাগে এবং মাত্র ৩-৪ মাসের মধ্যে চালানতো উঠে আসেই বরং সঠিক নিয়ম পদ্ধতি মেনে এ কাজটি করলে অনায়াসে অধিক যায়।

লেখক : উপপরিচালক (গণযোগাযোগ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি,

জনপ্রিয় লেখা