ময়মনসিংহের ফুলপুরে কৃষকদের মাঝে কম্বাইন্ড হারভেস্টার বিতরণ করা হয়েছে।
রবিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ৩টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার বিতরণ করে এর উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেল ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শীতেষ চন্দ্র সরকার।
জানা যায়, এবার মোট ছয়জন কৃষককে ৬টি হারভেস্টার দেওয়া হবে। প্রতিটি হারভেস্টারের মূল্য ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার ভর্তুকি দিবে ১৪ লাখ টাকা। বাকি ১৭ লাখ টাকা কৃষককে পরিশোধ করতে হবে।
ফুলপুর পৌরসভার চরপাড়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম ও সিংহেশ্বর ইউনিয়নের পলাশকান্দা গ্রামের কৃষক আবুল ফাত্তাহ শোয়ায়েব আহাম্মদ বলেন, আমরা এককালীন ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। বাকি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা আগামী ১ বছরের মধ্যে দুই সীজনে ৬ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তারা বলেন, কৃষিবান্ধব এই সরকার ১৪ লাখ টাকা ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের এই যন্ত্রটা দিয়েছেন। এর দ্বারা ডোমেস্টিক ডিমান্ড ফুলফিল করে এটাকে কমার্শিয়াল কাজেও ব্যবহার করা যাবে। যদি একজন ভাল ড্রাইভারের দ্বারা এটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া পারভীন লাকি, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার শহিদুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. প্রাণেশ চন্দ্র পণ্ডিত, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার দেলোয়ার হোসেন খান, উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সিরাজুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বছর ফুলপুরের ১০টি ইউনিয়নে বোরো হাই ব্রিড ধানের চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। আর উফসী জাতীয় ধানের চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। মোট ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ফসল করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গ্রামে আগে যারা কৃষি কাজ-কাম করতো তারা মিল ফ্যাক্টরী বা গার্মেন্টসে চলে যাওয়ার কারণে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বোরো ধান কাটার সীজনকে সামনে রেখে সরকার এ সংকট কাটিয়ে উঠতে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করেছে। এই হারভেস্টার দ্বারা খুব সহজে ও অল্প সময়ে কৃষকরা তাদের নিজেদের ধান ঘরে তোলাসহ অন্যের ধানও কেটে দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কামরুল হাসান কামু বলেন, এটা দ্বারা খুব দ্রুত ধান কাটা যাবে। এক একর জমির ধান কাটতে সময় লাগবে মাত্র ১ ঘণ্টা। শ্রমিক খাটালে যেখানে ১০ হাজার টাকা খরচ হতো সেখানে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের দ্বারা মাত্র ২ হাজার টাকায় সম্ভব। আগামীতে এর ব্যবহার আরো বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।