ধান, গমসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভ পাওয়ায় আম চাষে ঝুঁকছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকেরা। চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় আম্রপালি আমের বাগান গড়ছেন তারা।
জানা গেছে, বিগত ৫ বছরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ আমের বাগান স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও আম্রপালির আম গাছ বেশি বড় না হওয়ায় গাছের মাঝামাঝি ফাঁকা জায়গায় ধান গম পাট, আলু, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল সাথী ফসল হিসেবে চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
চাষিরা জানান, এ জেলার মাটি তুলনামুলক উচুঁ। কয়েক যুগ ধরে এ মাটিতে ধান, গম, পাট, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করে আসছেন তারা। তবে এসব ফসল উৎপাদন করে নায্যমূল্য না পেয়ে চাষিরা প্রতি বছর লোকসান গুণে আসছেন। পরে লোকসানের হাত থেকে রক্ষায় জমিতে আম বাগান স্থাপন শুরু করেন তারা।
আমের বাগান হতে বিষমুক্ত আম ও সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন ফসল পাওয়ায় কৃষকেরা দু’দিক দিয়ে লাভবান হয়ে আসছেন। যাদের নিজস্ব জমি নেই, তারাও অন্যের জমি ১০ থেকে ১২ বছরের জন্য ভাড়া নিয়ে সেখানে আম্রপালি জাতের রূপালি আমের চাষ করে আসছেন।
পীরগঞ্জ উপজেলার মিজানুর, সাদেকুল ও হাসিবুল জানান, এক বিঘা জমিতে আম্রপালি জাতের গাছ লাগানো যায় কমপক্ষে ১৬০টি। ৩ বছরের মাথায় প্রতিটি গাছ থেকে এক কেরেট (২০ কেজি) আম পাওয়ায় যায়। প্রতি কেজি ৫০ টাকা হারে এক কেরেটের দাম ১ হাজার টাকা।
সে হিসেবে একবিঘা জমিতে প্রাপ্ত আম বিক্রি হয় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর প্রথম বছর যে আম পাওয়া যায় পরের বছর পাওয়া যায় তার দ্বিগুণ। এভাবে প্রতি বছর আম ও লাভের পরিমাণ বাড়তে থাকে ৯ বছর পর্যন্ত। পরবর্তীতে টপ অরকিং করা হলে আমের ফলন আবারও বাড়ানো।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন জানান, জেলার ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ছোট-বড় ১৫ শতটি বিভিন্ন জাতের আমের বাগান রয়েছে।
এ জেলার কৃষকরা ধান, গম, পাট আবাদের পাশাপাশি আম বাগান করে বেশি লাভবান হচ্ছেন। ফলে দিনদিন আমের বাগানের দিকে ঝুঁকছেন বলে তিনি জানান।