মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় নিষিদ্ধসময়ে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের ৩০ হাজার ৯২০ দশমিক ৯২ টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি মঞ্জুরী আদেশ জারি করেছে।
মঞ্জুরী আদেশে নিষিদ্ধকালে জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলেদের জন্য ২য় ধাপে ২৯ হাজার ৯১৯ দশমিক ৬৮ টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
দেশের ২০ জেলার জাটকা সম্পৃক্ত ৯৮টি উপজেলায় ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯৬টি জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এর আওতায় চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মে দুই মাস প্রতিটি নিবন্ধিত ও কার্ডধারী জেলে পরিবারকে মাসে ৪০ কেজি হারে দুই মাসে ৮০ কেজি চাল দেওয়া হবে।
এর আগে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মেয়াদে ১ম ধাপে জাটকা সম্পৃক্ত এ উপজেলাগুলোতে ৩ লাখ ২৮ হাজার ৮১৫টি জেলে পরিবারকে ২৬ হাজার ৩০৫ দশমিক ২০ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বিতরণ করেছে সরকার।
২য় ধাপে ১ম ধাপের চেয়ে ৪৫ হাজার ১৯১ টি বেশি জেলে পরিবারকে ভিজিএফ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভিজিএফ চাল ১২ মে ২০২১ তারিখের মধ্যে যথানিয়মে উত্তোলন ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিতরণের জন্য মঞ্জুরী আদেশে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এতে ১ম ধাপে যারা বরাদ্দ পায়নি ২য় ধাপে বরাদ্দ বিতরণের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলেদের জন্য বরাদ্দপ্রাপ্ত উপজেলাগুলো হলো- ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয়, দৌলতপুর ও হরিরামপুর, মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর, শ্রীনগর, লৌহজং, টঙ্গিবাড়ী ও গজারিয়া, ফরিদপুর জেলার সদর, মধুখালী, সদরপুর ও চরভদ্রাসন, রাজবাড়ী জেলার সদর, পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দ, শরীয়তপুর জেলার জাজিরা, ভেদরগঞ্জ, নড়িয়া ও গোসাইরহাট, মাদারীপুর জেলার সদর, কালকিনি ও শিবচর, চট্টগ্রাম সদর, বাঁশখালী, সীতাকুন্ড, সন্দ্বীপ, আনোয়ারা ও মীরসরাই, ফেনী জেলার সোনাগাজী, নোয়াখালী জেলার সদর, হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর জেলার সদর, রামগতি, রায়পুর ও কমলনগর, চাঁদপুর জেলার সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ, বাগেরহাট জেলার সদর, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, কচুয়া, রামপাল, চিতলমারি, শরণখোলা ও ফকিরহাট, সিরাজগঞ্জ জেলার সদর, চৌহালি, বেলকুচি, কাজীপুর ও শাহজাদপুর, বরিশাল জেলার সদর, মেহেন্দিগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা, বাবুগঞ্জ, বানারীপাড়া, উজিরপুর, গৌরনদী ও বাকেরগঞ্জ, পিরোজপুর জেলার সদর, মঠবাড়ীয়া, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী ও কাউখালী, পটুয়াখালী জেলার সদর, কলাপাড়া, বাউফল, গলাচিপা, রাঙ্গাবালি, মির্জাগঞ্জ, দশমিনা ও দুমকি, ভোলা জেলার সদর, বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন, দৌলতখান, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও মনপুরা, বরগুনা জেলার সদর, আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী এবং ঝালকাঠী জেলার সদর, কাঁঠালিয়া, নলছিটি ও রাজাপুর।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিবছর ০১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী জাটকা আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ০৪ (চার) মাস জাটকা আহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের সরকার মানবিক সহায়তা দিয়ে থাকে।
অপর মঞ্জুরী আদেশে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ বন্ধকালীন কাপ্তাই হ্রদ তীরবর্তী রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ১০টি উপজেলার ২৫ হাজার ৩১টি নিবন্ধিত জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে ১ হাজার ১ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের মে ও জুন দুই মাসের জন্য পরিবার প্রতি মাসিক ২০ কেজি হারে দুই মাসে ৪০ কেজি করে এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ভিজিএফ চাল ২০২১ সালের ১০ জুনের মধ্যে যথানিয়মে উত্তোলন এবং নিবন্ধিত ও কার্ডধারী জেলেদের মধ্যে বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি উপজেলা হলো রাঙামাটি জেলার সদর, লংগদু, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকল এবং খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি ও দীঘিনালা।
প্রতিবছর মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। এ সময় মৎস্য আহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের সরকার মানবিক সহায়তা দিয়ে থাকে।