Friday, 30 May, 2025

সর্বাধিক পঠিত

শীতকালীন সবজি লাউ চাষ কিভাবে করবেন!


শীতকালীন সবজি লাউ চাষ এর বিষয়ে জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ

লাউ শীতকালীন সবজি হিসেবে অনেক জনপ্রিয়। বর্তমান সময়ে এটি সারাবছরই চাষ করা হয়। সাধারণত শীতকালে বসতবাড়ির আশপাশে এটির চাষ করা হয়। শাক হিসেবে লাউয়ের পাতা ও ডগা খাওয়া যায়। তবে শুধু লাউ নয় এর শাকও খুব পুষ্টিকর হয়ে থাকে। সেকারনেই শীতকালীন সবজি লাউ চাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ চলুন জেনে নেয়া যাক শীতকালীন সবজি লাউ চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত।

আমাদের দেশে লাউয়ের বিভিন্ন রকম জাত রয়েছে। এগুলোতে পার্থক্য হয় লাউয়ের আকার-আকৃতি এবং গাছের লতানোর পরিমাণেও। শীতকালীন সবজি লাউ চাষ করার জন্য এই জাত সম্পর্কে সমূহ ধারণা থাকা প্রয়োজন।

লাউয়ের জাত

আরো পড়ুন
“চাষ করে মাছ বড় করা যায়, সৃষ্টি করা নয়”- উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “চাষিরা মাছ বড় করতে পারেন, কিন্তু মাছ সৃষ্টি করতে পারেন না। প্রকৃতির Read more

লবণাক্ত জমিতে ফসল চাষ: টেকসই উপকূলীয় কৃষির সম্ভাবনা

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের অনেক এলাকায় মাটির লবণাক্ততা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। এই ধরনের জমিতে প্রচলিত ফসলের উৎপাদন কমে যায়, Read more

কিছু দেশি উন্নত ধরনের লাউয়ের জাত রয়েছে।

এসব জাতের গাছের বর্ণ হয় গাঢ় সবুজ থেকে হালকা সবুজ।

১৯৯৬ সালে বারি লাউ-১ জাতটি বাছাইয়ের মাধ্যমে উদ্ভাবন করা হয়। সেই সাথে সর্বত্রই চাষাবাদের জন্য অনুমোদন পায়।

এই গাছের পাতা সবুজ এবং নরম।

চারা রোপণের ৪০-৪৫ দিন  এর মধ্যেই পুরুষ ফুল ফোটে এবং স্ত্রী ফুল ফোটে ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে।

এই গাছের লাউ লম্বায় ৪০-৫০ সেন্টিমিটার হয়, বর্ণ হয় হালকা সবুজ।

প্রতিটি লাউয়ের ওজন হয় ১.৫-২.০ কেজি, প্রতি গাছে ১০-১২টি করে লাউ ধরে।

সারা বছরই এ জাতটি চাষ করা যায়।

অন্যদিকে রয়েছে গোলাকার বা লম্বা আকৃতির হাইব্রিড লাউ।

মাটির ধরণ

প্রায় সব ধরনের মাটিতে শীতকালীন সবজি লাউ জন্মে।

কিন্তু লাউ চাষের জন্য উত্তম হল দো-আঁশ থেকে এঁটেল দো-আঁশ মাটি।

সাধারণত একটি লতানো উদ্ভিদ লাউ বছরের অধিকাংশ সময় চারা লাগিয়ে উৎপাদন করা সম্ভব।

লাউ চাষ করার জন্য চারা পলিথিন ব্যাগে তৈরি করাই ভালো।

এর ফলে বীজের খরচ কম হবে।

এতে হেক্টর প্রতি ৮০০-১০০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হবে।

তবে চারা কিন্তু মাটি দিয়ে মাদা তৈরি করেও উৎপাদন করা যাবে।

মাদা প্রতি ৪-৫টি বীজ বপন করতে হয়, যা ৪-৫ দিনের মধ্যেই অঙ্কুরিত হবে।

সাধারণত বসত বাড়ির আশপাশে ২-৩টি লাউ গাছ লাগানো হয়।

কিন্তু বেশি পরিমাণে লাউয়ের চাষ করতে হলে প্রথমে জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে প্রস্তুত করতে হবে।

২×২ মিটার দূরত্বে প্রতি মাদায় ৪-৫টি করে বীজ বপন করা ভাল।

লাউ মাচাবিহীন অবস্থায় চাষ করা গেলেও মাচায় ফলন বেশি হয়।

তাছাড়া পানিতে ভাসমান কচুরিপানার স্তূপে মাটি দিয়েও বীজ বপন করা যায়।

চারা যদি একটু বড় হয় তাহলে মাদা প্রতি ২টি করে চারা রেখে বাকিগুলো উপড়ে ফেলতে হবে।

নিড়ানি দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করতে হবে।

লাউগাছে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি দিতে হবে।

গাছ ১৫-২০ সেন্টিমিটার বড় হলে গোড়ার পাশে বাঁশের ডগা কঞ্চিসহ মাটিতে পুঁতে দিতে হবে।

রোগ ও পোকার আক্রমণ

এ সবজিতে এক ধরণের পোকার আক্রমণ হয়। এর নাম রেডপামকিন বিটল।

এ পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ধরে ধরে মেরে ফেলতে হবে।

কিছু প্রজাতির ঘাসের মাধ্যমে লাউয়ের ‘মোজাইক ভাইরাস’ রোগ হয়।

এক্ষেত্রে কৃষি অফিসারের পরামর্শমতো কাজ করতে হবে।

বারি লাউ-১ এর চারা সাধারণত রোপণের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ফল দেয়।

ফলের গায়ে প্রচুর শুং এর উপস্থিতি থাকলে ফল তোলা বা সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময় বলে বিবেচিত।

0 comments on “শীতকালীন সবজি লাউ চাষ কিভাবে করবেন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ