তাপমাত্রা মাছ চাষের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয়। মাছ চাষে তাপমাত্রার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। জুন – আগস্ট মাসে রোদের প্রভাবে পানির তাপমাত্রা ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়ে গিয়ে মাছ চাষে ব্যাহত করে।
অগভীর পুকুরের পানির তাপমাত্রা খুব সহজেই বৃদ্ধি পায় এবং এতে পানির অক্সিজেন ধারণ ক্ষমতা কমে যায়।
চৈত্র -বৈশাখ মাসের দিকে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়।
পানির তাপমাত্রা বেড়ে গেলে করনীয়
পানির তাপমাত্রা অধিক বৃদ্ধি পেলে পুকুরে বাহির থেকে ঠাণ্ডা পানি সরবরাহ করতে হবে।
পুকুরের তলদেশে সুবিধাজনক স্থানে তলার কাদা উঠিয়ে কিছু কিছু গভীর অংশ সৃষ্টি করতে হবে যেন পানি মাত্রাতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে মাছ গভীর স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারে।
পুকুরের এক কোনায় অল্প গাছপালা থাকলে অধিক গরমে মাছ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিতে পারে, তবে খেয়াল রাখতে হবে পাড়ের গাছপালার জন্য যেন পুকুরের পানিতে সূর্যালোক প্রবেশে কোন বাঁধা তৈরি না হয়।
এছাড়া পানি পরিবর্তনের সুযোগ থাকলে অধিক গরম পানি পরিবর্তন করে ঠান্ডা পানি পুকুরে প্রবেশ করাতে হবে।
নিয়মিত পুকুরে চুন প্রয়োগে পানির তাপমাত্রা ধারন ক্ষমতা বেড়ে যায়। পানি সহজে ঠান্ডা ও গরম হয় না।
গ্রীষ্মকালে কৃত্রিমভাবে সেড তৈরী করে তাপের স্তরীয় বিন্যাস প্রতিরোধ করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
এয়ারেটর চালনা করেও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
মাছ চাষে তাপমাত্রার প্রভাব
মাছের বৃদ্ধিঃ পানির মাছের বৃদ্ধি সাধারণত ২৫ -৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ভাল হয়। তাপমাত্রার সাথে মাছের বৃদ্ধিতে নিচের সচিত্র বর্ননা দেখলে বিষয় টা পরিস্কার হয়।
মাছের জৈবিক ও রাসায়নিক কার্যাবলীঃ
তাপমাত্রার দ্বারা জলাশয়ে মাছের জৈবিক ও রাসায়নিক কার্যাবলী প্রভাবিত হয় । সাধারণত প্রতি ১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পুকুরে জৈবিক ও রাসায়নিক কার্যাবলীর মাত্রা দ্বিগুন বৃদ্ধি পায় । তবে ৩৭ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে এই কার্যক্রম ব্যহত হয়।
মাছের প্রজননঃ
মাছের প্রজনন তাপমাত্রার রেঞ্জের উপর নির্ভরশীল । উদাহরণস্বরুপ Tilapia mossambica গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের মাছ । এ মাছ ৮.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার নীচে বৃদ্ধি হয় না । এ মাছের প্রজননের অনুকূল তাপমাত্রা হলো ২১ – ২৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। তবে ৩৭ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে এই কার্যক্রম ব্যহত হয়।