
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরতে নেমেছেন জেলেরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ফের জালে মাছ ওঠার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত মৎস্যজীবীরা দলে দলে নদীতে নেমেছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান জানান, মার্চ ও এপ্রিল মাসে ২৫ সেন্টিমিটারের কম দৈর্ঘ্যের ইলিশ (জাটকা) সংরক্ষণের জন্য চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।
এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে জেলা মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে ১,০৬৪টি অভিযান চালায়। অভিযানে ১২৯ জন জেলে আটক হন, এর মধ্যে ৫ জনকে কারাদণ্ড এবং ১২৪ জনকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়। জব্দ করা হয় প্রায় ১২ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ১৩টি বেহুন্দি জাল, ৩৩৪টি অন্যান্য জাল, ৬ হাজার ৭৬৬ টন জাটকা এবং ৩ হাজার ৫২ টন অন্যান্য মাছ।
চাঁদপুর সদরের মৎস্যজীবী নেতা তছলিম ব্যাপারী বলেন, “জেলেরা ইলিশের আশায় নদীতে ফিরেছেন, তবে মাছ ধরা সম্পূর্ণই প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল।” তিনি আরও জানান, সরকারের পক্ষ থেকে বিকল্প কর্মসংস্থান ও উপকরণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।
নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, অভিযানে একটি থানা ও পাঁচটি পুলিশ ফাঁড়ি থেকে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়। এ সময়ে ৯ কোটি ৯০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ১৮ টন জাটকা, ১২৩টি নৌযান এবং ২৬৮ জন জেলে আটক করা হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরও জানান, অভিযানের সময় জেলেদের চার কিস্তিতে জনপ্রতি ১৬০ কেজি চাল খাদ্য সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয়। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই কঠোর তদারকির ফলে এবছর ইলিশের উৎপাদন বাড়বে।