কর্মব্যস্ততা শুরু হয় কাকডাকা ভোরে। ঘাটে এসে ভিড়তে থাকে একের পর এক ট্রলার। ঝাঁপি নিয়ে শ্রমিকরা ছুটে যান, ট্রলার থেকে মাছ আড়তে এনে স্তূপ করেন। এরপর নিলাম, নিলাম শেষে মাছ নিয়ে চলে যান ক্রেতারা। তবে গত সোমবার সকালে দেখা যায় নিরব হয়েছে মাছের আড়তগুলো । দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার বিএফডিসি পাথরঘাটা ও চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাট। সেখানে গিয়ে দেখা মেলেনি এই চিরচেনা দৃশ্য। নিরব হয়েছে মাছের আড়তগুলো, নেই কোন ক্রেতা।
ইলিশের আহরণ বন্ধ
প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা করার জন্য সারা দেশে ইলিশ এর সবরকম কার্যক্রম বন্ধ।
গত ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
এ সময় সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ।
এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
গত ৩ তারিখ, রোববার মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।
মোট ২০টি জেলার নদ-নদী, মোহনা ও সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
এগুলো হল ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, বরিশাল, ভোলা, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বাগেরহাট।
চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের অবসর সময় এখন আড্ডা দিয়ে পার করছেন। সহস্রাধিক শ্রমিক নেই, তাই মাছঘাটের ২০ থেকে ২৫টি চায়ের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে।
চায়ের দোকানের জমজমাট আড্ডা, হইচই যেন হুট করেই হারিয়ে গেছে।
এই মাছঘাটের ব্যবসায়ী সম্রাট বেপারী জানান, এই অবসর সময় কাটছে পুরোনো হিসাবনিকাশ দেখে।
জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শবে বরাত।
তিনি জানান, ইলিশ বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ নিষেধাজ্ঞার সময়। ব্যবসায়ীরা তা মেনে চলছে।
তার আশা অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হবে, ইলিশের উৎপাদন আগামীতে আরও বাড়বে।
রুপালি এই মাছের দেখা মিলছিল না এ বছর ইলিশের মৌসুমের শুরুতে।
তবে বাজার জমে ওঠে শেষ দিকে।
বাজার যখন সড়গরম হচ্ছিল ঠিক তখনই এই নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
এতে অনেকেই অবশ্য তাদের হতাশার কথা জানিয়েছেন।
যদিও সরকার তরফ থেকে বলা হয়েছে যে এই নিষেধাজ্ঞা তাদের ভবিষ্যত ভালোর জন্যই, তবে অনেক জেলে ও মাছ শিকারি তাতে সায় দিচ্ছেন না।