আমন ধান কাটা শুরু হবে আর এক থেকে দেড় মাস পর। কৃষকেরা সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু এ অবস্থায় মৌলভীবাজারে ধানের পাতা হলুদ হচ্ছে। পাতা পচে ঝরে যাচ্ছে দেখে ধানের ফলন ভালো হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকেরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় আমন ধান রোপণ করা হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে।
এবার ব্রি-৪৯ জাতের ধান সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে।
গতকাল শনিবার সদর উপজেলার একাটুনা, কচুয়া, বরকাপন, বানেশ্রী, পাড়াশিমইল, বুড়িকোনা, বিরাইমাবাদ, রসুলপুর, রায়পুর, উলুয়াইলসহ বিভিন্ন গ্রামে বিস্তীর্ণ আমন ধানের খেত।
এখনো থোড় বের হয়নি কিন্তু দূর থেকে মনে হচ্ছে অনেক জমির ধান পেকে গেছে।
কাছে গেলে পাতা হলুদ হয়ে গেছে দেখা যায়।
উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষকরা
কৃষকরা জানান গাছের সবুজ পাতা লাল বা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। সাদা হয়ে পচে কিছু পাতা ঝরে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শমতো পটাশসহ বিভিন্ন ধরনের সার স্প্রে করছেন। অনেকে দু-তিনবার করেও স্প্রে করেছেন। কিন্তু ফলাফল শুন্য।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানায়, কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পাকা ধান কাটা শুরু হবে।
তবে প্রতিবছর এ রকম করে কিছু কিছু জমির ধান গাছের পাতা লাল বা হলুদ হয়ে থাকে।
সে তুলনায় এর পরিমান এবার একটু বেশি হয়েছে।
সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি, যার কারণে এবার ধান গাছের খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
ধান গাছ পটাশিয়াম, সালফার ইত্যাদি উপাদান পানির অভাবে গ্রহণ করতে পারেনি।
যার কারণে ধান গাছের পাতার রং বদলে হলুদ হয়ে যাচ্ছে।
কৃষি বিভাগ আশ্বস্ত করছে কোনো রোগের কারণে এ রকম হচ্ছে না।
মাটিতে উচ্চমাত্রায় পটাশ ও ফসফরাস এর ঘাটতি রয়েছে।
এবং মাটিতে স্বল্পমাত্রায় ঘাটতি রয়েছে সালফারের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত কাজী লুৎফুল বারী।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞ দল এ বিষয়ে মাঠ পরিদর্শন করেছে।
তাঁরা কুইক পটাশ, থিয়োবিট সার স্প্রে করতে বলছেন কৃষকদের। এতে তিন-চার দিনের মধ্যেেই পাতা সম্পূর্ণ সবুজ হয়ে যাবে। ভবিষ্যতের জন্য পাতার এ রং বদল একটা সতর্ক সংকেত। জলবায়ু পরিবর্তন হবার কারণে শুধু বৃষ্টিনির্ভর হওয়া যাবে না। সুষম সার, সম্পূরক সেচব্যবস্থা ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হবে।