সারা বিশ্বেই পানীয় হিসেবে কফি জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও কফির জনপ্রিয়তা অনেক। তবে দেশে যা পাওয়া যায় তার অধিকাংশ কফিই আমদানি করা। দেশের পার্বত্যাঞ্চলে কফির চাষ তাই জনপ্রিয় হচ্ছে দিন দিন। ভালো দাম পাওয়ায় দেশের পার্বত্যাঞ্চলে কফির চাষ হচ্ছে জুমের চাষের পরিবর্তে। বান্দরবান জেলায় এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সফলতা এসেছে।
স্থানীয়রা জানান, বান্দরবানে জুম চাষের জমি দিন দিন কমে যাচ্ছে।
তাই অনেক চাষিই এখন ফলদ ও অর্থকরী ফসলের দিকে ঝুঁকছেন।
কফি চাষের ধারণা সেখান থেকেই এসেছে।
বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতায় চিম্বুক পাহাড়।
এই পাহাড়েই কফি চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নের জাল বুনছেন চাষিরা।
চাষিরা জানান, বর্ষা মৌসুমে কফির চারা রোপণ করতে হয়।
গাছের ছায়া ও মাটির আর্দ্রতা লাগে, আবার বেশি ছায়া হলেও ফলন কম হয়। তাই রোদও লাগে।
ফলদ গাছের সঙ্গে পাওয়া যায় কফি গাছের জন্য উপযোগী রোদ-ছায়ার পরিবেশ।
দেশে রোবস্ট ও অ্যারাবিক নামের দুই ধরনের কফি চাষ হচ্ছে বলে তারা জানান।
এসব কফির খোসাসহ প্রতি কেজি ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
একটি গাছ থেকে কফি ফল পাওয়া যায় বছরে ৫ কেজি থেকে সর্বোচ্চ ১৫ কেজি পর্যন্ত।
একটানা ৪০-৫০ বছর পর্যন্ত কফি পাওয়া যায়।
বালাঘাটা হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক উদ্যানতত্ত্ববিদ ড. সাফায়েত আহমদ সিদ্দিকী।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৬৫ জন চাষিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে এ কেন্দ্র থেকে।
৯ হাজার ৭৫০টি অ্যারাবিক কফির চারা সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা হয়েছে।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম শাহ্ নেয়াজ।
তিনি জানান, পাহাড়ি এলাকা প্রাকৃতিক পরিবেশ, জলবায়ু ও মাটির কারণে কফি চাষের উপযোগী।
বিশেষ করে কফি চাষের জন্য খুবই উপযোগী পরিকল্পিতভাবে লাগানো পুরোনো আমবাগান।
বান্দরবান সদর, রুমা, রোয়াংছড়ি, থানছি ও লামা উপজেলায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১৪৬ হেক্টর জমিতে কফি চাষ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
জেলায় ২০০ একর জায়গায় পূর্ণ বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ হচ্ছে।
২০ হেক্টর জায়গায় ফল পাওয়া যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এখন পর্যন্ত ৬২৫ জন কৃষককে ৩৭ হাজার ২০০ চারা দেয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের কৃষি উপকরণ দেয়া হয়েছে।