নদীর তীরে কৃষিজমি ইজারা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনার নদীর তীর ঘেষা কৃষি জমিগুলো ইজারা দিয়েছে। এরই প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চার গ্রামের মানুষ বৃহস্পতিবার (আজ) দুপুরে ইজারা বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধন করেন।
এলাকাবাসী জানান যে, আশুগঞ্জ নদীবন্দরের অধীনে পাওয়ার স্টেশন এলাকা হতে কালাসুতা খাল পর্যন্ত চার কিলোমিটার অংশ মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত কৃষিজমি। আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ২ লাখ ৫২ হাজার টাকায় স্থানীয় মো. মহিউদ্দিন মোল্লাকে ইজারা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চারটি গ্রাম সোহাগপুর, বাহাদুরপুর, দুর্গাপুর ও তাজপুর গ্রাম ইজারা দেওয়ার স্থানের মধ্যে পড়েছে । এই সকল জায়গার অধিকাংশই কৃষিজমি। কোনো পন্টুন ও সড়ক নদীর তীরের জায়গায় নেই ।
ইজারা দেওয়ার পর পরই মহিউদ্দিন মোল্লা দলবলসহ ইজারার জায়গায় ইচ্ছামত ইজারা আদায় করছেন। কৃষিপণ্য, সার ও মালবাহী কোনো নৌকা ভিড়লেই হচ্ছে ইজারা। ফলাফল হিসেবে প্রায়ই স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে ইজারাদারের কথা-কাটাকাটি হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।
ইজারার টাকা উত্তোলন নিয়ে ইজারাদার ও এলাকাবাসীর মধ্যে বর্তমানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। উল্লেখ্য যে আশুগঞ্জ নদীবন্দরের অধীনে পাওয়ার স্টেশন এলাকা থেকে কালাসুতা খাল পর্যন্ত ইজারা দেওয়া এলাকায় প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের মালবাহী নৌকা ভেড়ে।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জানান, এই ইজারা দিয়েছেন নদীবন্দরের বন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো. শহীদ উল্যাহ। যার দরুন চার গ্রামের হাজারো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। কৃষকদের বাঁচাতে অবিলম্বে ইজারা বাতিলের দাবি জানান তিনি।
নদীর তীরে কৃষিজমি ইজারা
গ্রামের ফারুক মিয়া সহ গ্রামবাসীরা জানান স্থানীয় ব্যক্তিদের বাধা সত্ত্বেও জায়গাটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। যা মূলত অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে। ইজারা নেওয়ার পর পরই স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছ থেকে চাপ প্রয়োগ করে টাকা নেওয়ার কারণে যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এ ঘটনার জন্য বিআইডব্লিউটিএ দায়ী থাকবে বলেও তারা হুশিয়ারি জানান ।
মহিউদ্দিন মোল্লার বড় ভাই ইমরান মোল্লা অবশ্য অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান নিয়ম মেনেই সর্বোচ্চ দরদাতা তারা ইজারা পেয়েছেন। বিআইডব্লিউটিএর নির্দেশনার বাইরে কোন ইজারার টাকা উত্তোলন করা হয় না বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো. শহীদ উল্যাহর সাথে কথা বলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর নিয়ম মেনে জায়গাটি ইজারা দেয়া হয়। একাধিকবার দরপত্র আহ্বান করার পর চলতি বছর স্থানীয় মহিউদ্দিন মোল্লাকে দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ ৫২ হাজার টাকায় জায়গাটি ইজারা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। একটি পক্ষ সেকারণেই এমন অভিযোগ তুলছে। আর্থিক লেনদেনের ঘটনা নাকচ করে দেন তিনি। তবে কোন ইজারাদার শর্ত না মানলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।