Monday, 12 May, 2025

সর্বাধিক পঠিত

নিবন্ধন পেল ফলসা ফল ও রঙিন আম


দেশে এই প্রথম নিবন্ধন পেল ফলসা ফল ‘বারি ফলসা-১’ও রঙিন আম ‘বারি আম-১৪’। নতুন নিবন্ধন পাওয়া আমের জাতটি এসেছিল সৌদি আরব এবং ফলসাটি রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র থেকে এসেছে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র জাত দুটির নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। এর আগে দীর্ঘ সময় ধরে ফল দুটিকে নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে।

সারাদেশেই নতুন এই ফলসা এবং রঙিন আম চাষ করা সম্ভব। গত ৩১ ডিসেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও জাতীয় বীজ বোর্ডের সচিব নতুন এই আম ও ফলসার নিবন্ধন দেন। স্বার্থক হয় রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের গবেষণা ও পরিশ্রম। রবিবার নিবন্ধনপত্র রাজশাহী আসে।

আরো পড়ুন
বোরো ধানের দাম বেড়ে কৃষকদের মুখে হাসি

গত বছরের তুলনায় এবার বোরো ধানের চাষাবাদে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি বিপণন বিভাগ (ডিএএম) এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে Read more

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে ফসলের উৎপাদন কমছে: গবেষণা

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা ও খরার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ফসলের উৎপাদন ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে বলে জানিয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা। Read more

জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফল গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা ‘লিয়েনে’ সৌদি আরব গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি আমবাগান নিয়ে গবেষণার কাজ করতেন। ২০১০ সালে তিনি ‘টমিএটকিনস’ জাতের আম গাছের সায়ন (ডাল) সংগ্রহ করে আনেন। দেশে ফিরে তিনি সেটি রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রে দেন। এরপর ১০টি গাছে তার কলম করা হয়।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দীন জানান, প্রথমে ১০টি গাছে কলম করা হলেও ৯টি গাছই মরে যায়। অতিযত্নে কেবল একটি গাছকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। সেখান থেকে এখন চারটি মাতৃগাছ তৈরি করা হয়েছে। গত ১০ বছর ধরে গবেষণা করা হয়েছে। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই গাছে রঙিন আম পাওয়া গেছে।

আমটি জুলাই মাসের শেষে পাকে। আম পাকার আগেই মেরুন রঙ ধারণ করে। আমের গড় ওজন প্রায় ৫৫০ গ্রাম। এর ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গড় মিষ্টতা (টিএসএস) ২২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আমটি লম্বায় ১০ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার ও প্রস্থ ৮ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার। খোসা পাতলা ও মাংসল। নিবন্ধন পাওয়া জাতটির ধরণ ‘ইনব্রিড’।

অন্যদিকে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রে প্রায় ২০ বছর বয়সী একটি ফলসা ফলের গাছ আছে। ফলসা বাংলাদেশের একটি অপ্রচলিত ফল। আকারে ছোট টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি শিশুরা খুবই পছন্দ করে। ফলটি ভিটামিন আর মিনারেলে ভরপুর। গেল ১০ বছর ধরে এই ফলটিরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। তারপরই নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়। নিবন্ধন পাওয়া ফলসাও ‘ইনব্রিড’। বছরের মে-জুন মাসে এটি গাছে পেকে খাবার উপযোগী হয়। তখন এর রঙ হয়ে ওঠে কাল বা বেগুনি। ফল হয় পাঁচ থেকে ১২ মিলিমিটার ব্যাসবিশিষ্ট।

ড. আলীম উদ্দীন জানান, আম ও ফলসার নিবন্ধন পাওয়ায় তারা এখন যত বেশি সম্ভব চারা উৎপাদন করবেন। তারপর সরকারি নার্সারি গুলোতে দেবেন। রঙিন আমের চারা এখন চাষি পর্যায়ে খুব বেশি দেওয়া সম্ভব না হলেও আগ্রহীদের অন্তত একটি করে তারা দিতে চান। এছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন নার্সারিতেও দু’একটি করে দেওয়া হবে, যেন জাতটি ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। আর ফলসার প্রচুর চারা করা সম্ভব। এটি দ্রুত ছড়াবে।

0 comments on “নিবন্ধন পেল ফলসা ফল ও রঙিন আম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ