চাপাইনবাগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু জমিতে সেচ সংকট দেখা দেয়। এতে সেখানে ধান-সবজি চাষের পরিমাণ কমে গেছে। বর্তমানে সেখানে তুলা চাষে কৃষকদের আগ্রহ ব্যাপক ভাবে তৈরি হয়েছে। কৃষকরা জানান কম সেচ ও বৃষ্টির পানিতে চাষ হবার কারণে তারা তুলা চাষের প্রতি ঝুঁকছেন।
কম খরচে বেশি ফলন হয় তুলার
জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার তুলা চাষিদের সঙ্গে কথা হয়।
তারা জানায়, তুলার ফলন ভালো হলে বিঘায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হয়।
কিন্তু এর বীপরীতে কোনো রকম খরচ হয় না বলে তারা জানায়।
আষাঢ় মাসে বৃষ্টির পানিতে বীজ বপন করা হয়।
অগ্রহায়ণ মাসেই তুলার ফলন ঘরে তোলা যায়।
যার কারণে তুলাচাষিরা বেশি লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলার বড়দাদপুর গ্রামের কৃষক মোতাহার হোসেন।
তিনি বলেন, গত এক বছর থেকে ১৭ বিঘা জমিতে তুলার চাষ করছেন।
করোনার কারণে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে এসে এলাকার চাষিদের দেখে উদ্বুদ্ধ হন।
তার পর থেকেই তিনি তুলার চাষ করছেন।
তিনি জানান ১৭ বিঘা জমিতে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
সব খরচ বাদ দিয়ে ৬ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা পাবার আশা করেন তিনি।
একই বাগানে তিনি আম্রাপালি আমের গাছ লাগিয়েছেন সেখান থেকেও কিছু টাকা পাবেন বলে আশা করেন।
প্রায় বিনা সেচেই চাষ করা যায় তুলার
মোরসালিন নামের অপর এক তুলা চাষি জানান প্রতিদিনই বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নামছে।
প্রতিটি স্থানেই প্রচন্ড সেচের পানির সংকট দেখা দিচ্ছে।
সেখানে প্রায় কোন সেচ না দিয়েই তুলার চাষ সম্ভব হচ্ছে।
চার বছর ধরে চাষ করা এই চাষি বলেন এখন বর্তমান তুলার মূল্য ৩৬০০ টাকা মণ।
এবছরও দুই বিঘা জমিতে তুলার বীজ রোপণ করেছেন।
এবার আরও বেশি টাকা পাবার আশা করছেন তিনি।
গোমস্তাপুর উপজেলার বড় দ্বাদপুর ইউনিটের তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মুর্শেদ আলী।
তিনি জানান, এই বছর তার ইউনিটে প্রায় ১২০ বিঘা জমিতে তুলার চাষ হয়েছে।
তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক চাষিদের একটি প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তুলার রোগ বালাই পর্যবেক্ষেণ করে চাষিদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এই বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির সমস্যা অনেকদিন ধরেই বিদ্যমান।
তাই এখানে অন্য ফসল খুব কম হয় বিধায় তুলা চাষের জন্য এই জমিগুলো উপযোগী।