ধানের জমিতে সেচের পানির প্রয়োজন ছিল। কিন্তু দরকারি সে পানি সময়ে পাননি কৃষক, ক্ষোভে বিষপানে করেন আত্মহত্যা। সেচের পানি না পেয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় সাখাওয়াত হোসেন কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘটু গ্রামের দুই সাঁওতাল কৃষকদের আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার একমাত্র আসামি সাখাওয়াত হোসেন। গতকাল শনিবার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। সেচের পানি না পেয়ে আত্মহত্যার ঘটনার ১১ দিন পর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া সাখাওয়াত হোসেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এর একজন অপারেটর।
বিএমডিএ পরিচালিত ঈশ্বরীপুর-২ গভীর নলকূপের অপারেটরের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
ঈশ্বরীপুর গ্রামেই তার বসবাস।
এই গভীর নলকূপ থেকেই পাশের সাঁওতাল অধ্যুষিত নিমঘটু গ্রামে সেচ সুবিধা দেওয়া হয়।
জানা যায় ঘটনার দিন সাখাওয়াত হোসেনও পুলিশের সামনেই উপস্থিত ছিলেন।
সে সময় বিষপানে মৃত অভিনাথ মারানডি ও রবি মারানডি পরিবারের পক্ষ হতে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
পানি না দিয়ে সাখাওয়াত বার বার হয়রানি করেন এমন অভিযোগ করা হয়।
কিন্তু পুলিশ তাতে কোন কর্ণপাত করেনি।
বরং সাদা কাগজে কৃষক অভিনাথের স্ত্রীর সই নিয়ে সেদিনই অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করে।
তার পরের দিন অভিনাথের স্ত্রী থানায় উপস্থিত হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা করেন।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, গোদাগাড়ী থানার প্রেমতলী তদন্ত ফাঁড়ির অধীনে সাখাওয়াতের বাড়ি।
গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ফাঁড়ির পুলিশ সাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করে।
গোদাগাড়ী উপজেলার কদমশহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে তিনি জানান।
গত ২৩ মার্চ গোদাগাড়ীর নিমঘটু গ্রামে সঠিক সময়ে ধানের জমিতে পানির জন্য যান দুই কৃষক।
পানি না পেয়ে কৃষক অভিনাথ মারানডি ও রবি মারানডি বিষপানে আত্মহত্যা করেন।
এমনটাই তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
পরে এ ঘটনায় অভিনাথের স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন।
কৃষকদের মৃত্যু এবং সময়মতো পানি না পাওয়ার কারণ জানতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
তারা ইতিমধ্যেই গোদাগাড়ীর নিমঘটু ও ঈশ্বরীপুর গ্রাম পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয়দের বক্তব্য সংগ্রহ করেন।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও জাতীয় কৃষক সমিতি রাজশাহীতে আসামি গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে।
একই দাবিতে আগেও বিভিন্ন স্থানে একাধিক কর্মসূচি পালিত হয়েছে।