আমন খেতে মাজরা-পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে মৌলভীবাজারে । কমলগঞ্জ উপজেলায় প্রায় সকল জমিতে আক্রমণ হয়েছে এ পোকার। যার দরুণ ধানের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। কৃষকেরা জানান, গাছে ধান আসার কথা কিছুদিন পর। এ অবস্থায় পোকার আক্রমণ তাদের ভাবিয়ে তুলছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকা দমনে কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে যোগাযোগ করলে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে । ইতিমধ্যে রোপণের এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে এ ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে ধান কাটা হবে।
উপজেলার পতনউষার, মুন্সীবাজার, শমশেরনগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের খেতে মাজরা পোকা ভয়াবহভাবে আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকা ধান গাছের কাণ্ডের ভেতর থেকে খাওয়া শুরু করে। এতে ধানের চারার পাতা ছিদ্র হয়ে গিয়ে বাদামি রং ধারণ করছে। ইসলামপুর, আদমপুর ইউনিয়নে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণও লক্ষ করা গেছে প্রচুর। পাতা মোড়ানো পোকা পাতার সবুজ অংশ লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে খেয়ে ফেলে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পাতায় সাদা সাদা লম্বা দাগ দেখতে পাওয়া যায়। ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশি হলে পাতাগুলো পুড়ে যাওয়ার মতো দেখায়।
পতনউষার ইউনিয়নের চাষি কয়ছল আহমদ জানান, চার একর জমিতে এবার আমন ধান রোপণ করেছেন তিনি। মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণের শিকার হয়েছে চার একরের পুরোটাই। এমনকি বারবার কীটনাশক ছিটানো হলেও এ পোকা কোনভাবে দমন করা যাচ্ছে না। এক দফা কীটনাশক প্রয়োগে এক বিঘা জমিতে ব্যয় হচ্ছে ৫০০ টাকা। ফলে এই ধান এর উৎপাদন খরচও বাড়ছে। ফলন যদি ভালো না হয় তাহলে তিনি কী করবেন, বুঝতে পারছেন না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ রায় এর সাথে এ বিষয়ে কথা হয়। তিনি জানান, এ ধরণের সময়ে মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকার কিছু আক্রমণ হয়। এর আক্রমণ খুব স্বাভাবিক, তবে কৃষি বিভাগ তাদের সাথে সর্বত যোগাযোগ করছেন। তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান জানান, পোকার আক্রমণ বেড়ে যাবার কারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।