চলতি বছরের শুরুটা ভালো ছিল না। করোনার ধাক্কা, অনাবৃষ্টি ও খড়ার কবলে থাকায় থমকে গিয়েছিল চা উৎপাদন। তবে মৌসুমের শেষ দিকে আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। তাই দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিসময়ে। এতে ২৪ মিলিয়ন কেজি বেশি চা উৎপাদন হবার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
দেশে চা-বাগান রয়েছে ১৬৭ টি
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশের ১৬৭টি চা বাগান।
এতে ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে ৭৭ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন কেজি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রায় ৩৮ দশমিক ৩১ মিলিয়ন কেজি জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চা উৎপাদন হয়েছে।
যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন হয়েছে ৫০ ভাগের অনেক বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মৌসুমের শেষ পর্যন্ত ১০০ মিলিয়ন কেজি চা পাতা উৎপাদন হবে যদি উন্নয়ন নকশার ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।
কুয়াশার কারণে অন্যান্য বছর এই দিনে চা পাতা উৎপাদন অনেকটাই কম হতো।
এখনো চা গাছে কুঁড়ি গজাচ্ছে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায়।
সারাদেশে চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারসহ টি স্টেডের চা বাগান রয়েছে ১৬৭টি।
এছাড়া পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট ক্ষুদ্রায়তনের চা বাগানসহ বান্দারবনে আরও ৫ হাজার ক্ষুদ্র চাষি চা চাষের সাথে সম্পৃক্ত।
দেশে তিন লক্ষাধিক শ্রমিক এ খাতে নিয়োজিত।
বিশিষ্ট টি প্লান্টার পঞ্চগড়ের ইবাদুল ইসলাম।
দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে তিনি জানান।
চায়ের দাম কমে যাচ্ছে সিন্ডিকেটের কারণে নিলাম বাজারে।
এতে মালিক পক্ষ হিমশিম খাচ্ছে বাগান চালাতে।
অনেক বাগান মালিক ও চা বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন দিন।
দেশের বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট চা নিলাম কেন্দ্রে করে প্রতি কেজি চা পাতা ক্রয় করে ১৯০ থেকে ২০৫ টাকায়।
কিন্তু সে চাপাতাই খুচরা বাজারে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে তারা।
এছাড়া চোরাইপথে মান যাচাই ছাড়া দেশীয় পাতার সাথে মিশ্রণ করে বাজারজাত করা হয় নিন্মমানের ভারতীয় চা পাতা।
বেশি লাভের আশায় কৌশলে চা শিল্পের ক্ষতি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
উৎপাদনের সাথে সাথে চায়ের মূল্য বাড়াতে হবে বিদেশি বায়ারদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে।
নয়তো রক্ষা করা যাবে না অর্থকরী এ শিল্প।
বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম এনডিসি পিএসসি।
তিনি বলেন, গত বছর চায়ের উৎপাদন অনেকটা হ্রাস পেয়েছিল বৈরী আবহাওয়ার কারণে।
তবে সেই পরিস্থিতি নেই এ বছর।
গত বছরের তুলনায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন বাড়ছে।
এছাড়াও উৎপাদনের পাশাপাশি বিভিন্ন কার্যবিধি নিশ্চিতকরণ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা, বাগানে কঠোরভাবে কোভিড প্রটোকল নিশ্চিতকরণ, সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, রেশন এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের ফলে ২০২১ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জন হবে।
চা নিলামে সিন্ডিকেটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি তারা জানেন।
চা নিলামে দেশ-বিদেশের সব ব্যবসায়ী যাতে অংশগ্রহণ করতে পারেন এজন্য তারাই নিলামের ব্যবস্থা করবেন।