ধান-চাল উৎপাদনে বিখ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁ। চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা। ফসলের মাঠে ইতোমধ্যে ধানে সোনালি আভা ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরে আর কিছু দিনের মধ্যে উঠবে ধান। তাই এর পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুসারে, চলতি মৌসুমে জেলায় রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে মোট ১ লাখ ৯৭ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায় আমন ধান চাষের পরিমাণ নওগাঁ সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৯২০ হেক্টর, ধামইরহাটে ২০ হাজার ৩২০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ২৮ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমি।
এছাড়া পত্নীতলায় ২৭ হাজার ২০০ হেক্টর, নিয়ামতপুরে ২৯ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়।
অন্যদিকে বদলগাছীতে ১৪ হাজার ৩২৫ হেক্টর, রানীনগরে ১৮ হাজার ৬৫০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর, সাপাহারে ৯ হাজার ৮০০ হেক্টর, পোরশায় ১৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর এবং মান্দায় ১৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়।
চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান আবাদের জাতভিত্তিক হিসাবে স্থানীয় জাতের আবাদ হয় ২৬ হাজার ২৮৫ হেক্টর।
উফশী জাতের ধান ১ লাখ ৭০ হাজার ১১০ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের ৭১৫ হেক্টর জমি।
মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের কুশলবাড়ি গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান নয়ন।
তিনি বলেন, এ মৌসুমে মোটা ধান ১৩ বিঘা ও চিকন ধান ১২ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন তিনি।
আবহাওয়া অনুকূলে ছিল এবং বন্যা বা অন্যকোন দুর্যোগ না হওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
একই গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী তিন বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন বলে জানান।
সেচ খরচ কম লাগা আমনের আবাদে বড় সুবিধা।
বৃষ্টি না হলে মোটা জাতের ধানের জন্য একবার সেচ আর চিকন জাতের ধানে দুইবার সেচ দিলেই হয়।
এতে কীটনাশকসহ সব মিলিয়ে বিঘাপ্রতি সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ আসে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. সামছুল ওয়াদুদ।
তিনি বলেন, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে ছিল বিধায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এ বছর বন্যা ও দুর্যোগের কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এবার আমন ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৫ হেক্টর বেশি পরিমাণ জমিতে হয়েছে।