করোনা মহামারীর প্রাককালে একটি প্রশিক্ষণে নেদারল্যান্ড গিয়ে আটকে পড়েন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনিস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব।
বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকায় কোনোভাবেই দেশে ফিরতে পারছিলেন না তিনি। দুঃসহ সেই সময়ে পরিবার পরিজন ব্যতীত একাকী একটি মানুষের স্বদেশে পরিবারের কাছে ফেরার যে আকুলতা, লেখনীর মাধ্যমে তা তুলে ধরে প্রকাশিত হলো তার প্রথম বই ‘করোনায় ঘরে ফেরা’।
ড. মাছুমা হাবিব গত বছরের ১ মার্চ সরকারী আদেশে নেদারল্যান্ড সরকারের বৃত্তি নিয়ে একটি প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য নেদারল্যান্ডে যান। এর দুই সপ্তাহের মধ্যে ইউরোপে করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। পুরো ইউরোপ লক্ড হওয়ার পরও বাংলাদেশী দূতাবাস ও বৃত্তি প্রদানকারী সংস্থার সহায়তায় দেশের উদ্দেশ্যে তিনি বিমানের টিকিট পান।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে নেদারল্যান্ড থেকে রওনা হয়ে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুট বিমানবন্দরে এসে আটকা পড়েন। করোনার ভয়াবহ ঝুকি নিয়ে জার্মানীতে বাংলাদেশী এম্বেসীর সহযোগিতায় ৪০ দিন অবস্থানের পর দেশে ফিরতে সক্ষম হন তিনি। এমনই দুঃসহ সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখক ড. মাছুমা হাবিবের প্রথম প্রকাশনা ‘করোনায় ঘরে ফেরা’।
বইটি গ্রন্থমেলা ২০২১ এর চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনের ২৪৩ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও বইটি ঢাকায় দেশলাই, কনকর্ড, কাটাবন, চট্টগ্রামের নন্দন বইঘর, বাকৃবির কেয়ার মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপশি অনলাইনে রকমারি ডট কমেও বইটি পাওয়া যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন ড. মাছুমা হাবিব।
করোনা পরবর্তীকালে করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে লেখকের এই বিরল অভিজ্ঞতা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে থাকবে বলে অভিমত প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী। তিনি বলেন, কোনো পরিস্থিতিতেই হতাশাগ্রস্থ হওয়া যাবে না।
ড. মাছুমা হাবিব এমন কঠিন সময় অতিক্রমের মাধ্যমেই এক দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন যা তার লেখনীতে প্রকাশ পেয়েছে।
অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিবের পৈত্রিক নিবাস ঠাকুরগাঁও। তিনি কুষ্টিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং বগুড়ার সরকারী আজিজুল হক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএসসি ও এমএস ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিআইসি এবং পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি বাকৃবির গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনিস্টিটিউটে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।