ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের কোরবানির পশুর হাটে জাল নোট শনাক্ত করতে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে জাল নোট শনাক্তকরণ বুথ স্থাপনের জন্য ব্যাংকগুলো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক অনুমোদিত পশুর হাটগুলোতে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিনের সহায়তায় থাকবে ২১টি ব্যাংকের বুথ।
সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, দেশের অনুমোদিত কোরবানির পশুর হাটগুলোতে জাল নোট প্রচলন চক্রের অপতৎপরতা রোধে জাল নোট শনাক্তকরণ বুথ স্থাপন করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আপনাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অভিজ্ঞ ক্যাশ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে হাট শুরুর দিন হতে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিরতিহীনভাবে পশু ব্যবসায়ীদেরকে বিনা খরচে নোট যাচাই সংক্রান্ত সেবা প্রদান করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত তফসিলি ব্যাংকগুলোর তালিকা এতদসঙ্গে সংযুক্ত করা হলো।
১. উক্ত হাটসমূহে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে মনোনীত কর্মকর্তাদের নাম, পদবি ও মোবাইল নম্বরসহ আপনাদের ব্যাংকের সমন্বয়ক হিসেবে মনোনীত একজন উপযুক্ত কর্মকর্তার নাম, পদবি ও মোবাইল নম্বর আগামী ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে ইমেইলে প্রেরণ করতে হবে। আপনাদের ব্যাংকের সমন্বয়কারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট হাটে দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদের কার্যাদি মনিটরিং করবেন।
২. ঢাকার বাইরে যেসব জেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিস রয়েছে সেখানে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার অনুমোদিত পশুর হাটগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট অফিসের নেতৃত্বে গৃহীত অনুরূপ ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য আপনাদের আঞ্চলিক কার্যালয় বা প্রধান শাখাগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
৩. বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিস নেই এমন জেলাগুলোর সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও খানা বা উপজেলার অনুমোদিত পশুর হাটে বিভিন্ন ব্যাংকের এতদসংক্রান্ত দায়িত্ব বণ্টনের জন্য সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেস্ট শাখাগুলোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের চেস্ট শাখা কর্তৃক বণ্টিত দায়িত্ব অনুযায়ী আপনাদের ব্যাংকের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শাখাগুলোও যাতে পশুর হাটগুলোতে নোট যাচাই সংক্রান্ত সেবা প্রদান করে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
৪. বুথ স্থাপন কার্যক্রমের সুবিধার্থে ও সহযোগিতার জন্য (প্রয়োজনে) সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, জেলা মিউনিসিপালিটি কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা সংশ্লিষ্ট পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা এবং সার্বিক নিরাপত্তার জন্য (প্রয়োজনে) সংশ্লিষ্ট পুলিশ, র্যাব ও আনসার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা যেতে পারে।
৫. বুথে নোট যাচাইকালে কোনো জাল নোট ধরা পড়লে সেক্ষেত্রে ৪ জুলাইয়ের পরিপত্র নং- জাল নোট: ০১ (পলিসি) বা ২০০৭-১৯১ এ বর্ণিত নির্দেশনা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. বুথে ব্যাংকের নাম ও তার সঙ্গে জাল নোট শনাক্তকরণ বুথ উল্লেখপূর্বক ব্যানার বা নোটিশ প্রদর্শন করতে হবে।
৭. ইতোপূর্বে সরবরাহকৃত ব্যাংক নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ভিডিও চিত্রটি আপনাদের ব্যাংকের শাখাগুলোতে ঈদের আগ পর্যন্ত গ্রাহকদের জন্য স্থাপিত টিভি মনিটরগুলোতে পুরো ব্যাংকিং সময়ে প্রদর্শন করতে হবে।
৮. দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরকে এতদসংক্রান্ত দায়িত্বপালনের জন্য আপনাদের ব্যাংকের প্রযোজ্য বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা যাবে।
৯. পবিত্র ঈদুল আজহা সমাপ্তির পর পরবর্তী ১৫ (পনের) কর্মদিবসের মধ্যে উপরে বর্ণিত নির্দেশনার সূত্রে আপনাদের পরিপালিত বিষয়াদির একটি প্রতিবেদন আবশ্যিকভাবে অত্র বিভাগে প্রেরণ করতে হবে; এবং
১০. জাল নোট শনাক্তকরণ বুথে নোট যাচাই সংক্রান্ত সেবা প্রদান কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরকে অবশ্যই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক সুনিশ্চিত করতে হবে।