মৌলভীবাজারে সরিষার চাষ বেড়েছে চলতি মৌসুমে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলতি বছর রবি মৌসুমে ক্রমাগত বাড়ছে সরিষার চাষ। এ জেলার কৃষকরা উন্নত জাতের সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে এ বছর সরিষার চাষ বেড়েছে। সরিষার ব্যাপক ফলনে সম্ভাবনার হাতছানি দেখা দিচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে।
বড়লেখা উপজেলায় সিংহভাগ সরিষার উৎপাদন হয়
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে চলতি বছরে ফলন ভালো হবে সরিষার।
এবছর ২ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
কিন্তু তার বদলে সেখানে চাষ হয়েছে প্রায় ২৪০০ হেক্টর জমিতে।
গত বছরের চেয়ে সরিষা বেশি চাষ হয়েছে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে।
প্রতি হেক্টর জমিতে ১.৪ মেট্রিক টন সরিষার উৎপাদন হবার সম্ভবনা আছে।
কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় কৃষকদের সূত্রে জানা যায়, জেলার বড়লেখা উপজেলায় সিংহভাগ সরিষার উৎপাদন হয়।
একই জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।
এর আগে সরিষার গাছ বড় হলেও সরিষার ফলন কম হতো।
কিন্তু নতুন জাতের ছোট আকারের এ সরিষা সঠিক পরিচর্চা করা সম্ভব হয়।
গাছের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফল আসছে এতে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী।
তিনি বলেন, সরিষা তেল ফসলের মধ্যে অন্যতম একটি ফসল।
এক সময় অধিকাংশ মানুষ সরিষার তেল দিয়েই বিভিন্ন খাবার রান্না করে খেলে সে সময় মানুষের শরীরে রোগও কম হতো।
কালের বিবর্তনে কৃষক পর্যায়ে সরিষার আবাদ হ্রাস পায়।
ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের তেল বিদেশ থেকে আমদানি করে বাজার সয়লাভ করে।
এতে সরিষার দাম অনেকাংশে কমে যাবার কারণে কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
বর্তমানে আমদানি নির্ভরতা কমাতে, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য এবং কৃষকের লাভজনক কৃষি উৎপাদনের বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা তাই গবেষনা করে আবিষ্কার করেছেন উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা বারি ১৪, ১৫ ও ১৮।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার।
তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে এক ইঞ্চি জায়গাও যেন পতিত না থাকে তেমন নির্দেশ দিয়েছেন।
তারই নির্দেশে তারা নতুন নতুন জাত আবিষ্কারের মাধ্যমে হাওরাঞ্চলে শস্যের নিবিড়তা বাড়াতে নিরলস কাজ করে চলেছেন।
দেশের বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত সরিষা ১৮-এ জাতটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এতে ইরোসিক এসিডের পরিমাণ খুবই সামান্য।
যার পরিমাণ শতকরা ০.৫ ভাগ।