সাথী ফসল হিসেবে মাছের পাশাপাশি মুক্তা চাষ শুরু করেছেন চাঁদপুরের মতলবের এক চাষি কৃষ্ণা চন্দ্র। ঝিনুকের ভেতর মুক্তার আবরণ সৃষ্টি হয়নি এখনো। আরও কিছু সময় লাগবে মুক্তার আবরণ সৃষ্টি হতে।
তবে যেহেতু কোন বাড়তি খরচ নেই তাই লাভের আশাই করছেন তিনি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, মুক্তার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশে-বিদেশে। পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা চাষে ভালো লাভ পাওয়া সম্ভব।
মুক্তা চাষের শুরু
কৃষ্ণা মতলব উত্তর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ১১ বছর ধরে পুকুরে মাছ চাষ করেন। তিনি গত চার মাস আগে দুটি পুকুরে মাছের পাশাপাশি ঝিনুক চাষ শুরু করেন। ইউটিউব থেকে দেখেই তার এই কাজে আগ্রহ তৈরি হয় বলে তিনি জানান।
ইউটিউব থেকে দেখে বিভিন্ন স্থান থেকে ২০ হাজার ঝিনুক সংগ্রহ করেন তিনি।পরে প্রতিটি ঝিনুকের ভেতর বিশেষ পদ্ধতিতে নানা ধরনের নকশার ছাঁচ ঢুকিয়ে দেন।
ঝিনুকের ভেতর নকশাকারে মুক্তা উৎপন্ন হবে ১০ থেকে ১২ মাসের মধ্যে।
২০ হাজার ঝিনুক চাষে তার প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে ঝিনুক নষ্ট হয়ে গেছে পাঁচ হাজার । সব কিছু ঠিক থাকলে নির্দিষ্ট সময় শেষে অবশিষ্ট ঝিণুক থেকে তার ৪০ লাখ টাকার মতো লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষ্ণা জানান, গোল মুক্তা হতে সময় লাগে প্রায় দুই বছরের মতো। কিন্তু বিশেষ পদ্ধতির ডিজাইন মুক্তা হতে প্রায় এক বছর সময় লাগে। নকশার মুক্তার প্রচুর চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতে। লেয়ারের উপর নির্ভর করে প্রতি পিস ডিজাইন মুক্তা আড়াইশ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, সাথী ফসল হিসেবে মাছের পাশাপাশি মুক্তা চাষ জেলায় প্রথমবারের মতো শুরু করেছেন কৃষ্ণা। মৎস্য বিভাগ থেকে সকল প্রকার কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
যেহেতু নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়নি তাই মুক্তা এখনও পরিপূর্ণভাবে উৎপন্ন হয়নি। তবে মৎস্য বিভাগ কৃষ্ণার সফলতা আশা করছে। মুক্তা চাষে সফলতা পেলে জেলার অন্য মাছ চাষিদের মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা চাষে উদ্বুদ্ধ করবে মৎস্য বিভাগ।
কৃষ্ণা চন্দ্র জানান, মুক্তা চাষ বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে একটি ভালো মাধ্যম। ঝিনুকের জন্য আলাদা খাবারের প্রয়োজন হয় না আবার লাভ বেশি।