অনেক আগেই তরমুজের মৌসুম পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এই সময়ে এসেও হানিফের ভাসমান ধাপের মাচায় ঠিকই ঝুলে আছে ফলটি। কৃষক হানিফ মল্লিক এর বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের নকড়িরচর গ্রামে। কৃষক হানিফ মল্লিক এ বছরই প্রথম ভাসমান ধাপের মাচায় তরমুজ চাষ করে সফলতা। তার দেখাদেখি আগ্রহী হচ্ছেন অনেক চাষী। কৃষি অধিদপ্তরও এই সফলতায় খুব খুশি। তারা তাদের সর্বাত্মক সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন ভাসমান ধাপের মাচায় তরমুজ এর চাষে।
হানিফ জানান, প্রতি বছরের বর্ষা মৌসুমে ভাসমান ধাপে চাষ করেন তিনি। বর্ণি বাওড়ের কচুরিপানা দিয়ে ভাসমান ধাপ তৈরি করে শাকসবজি চাষ করেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে এবছর চারটি ভাসমান ধাপে তরমুজ লাগান। থাইল্যান্ডের সুইট ব্লাক-টু জাতের তরমুজের চারালাগিয়েছেন তিনি তার এই ধাপে।
প্রতিটি বেড ৫০ ফুট লম্বা ও ৫ ফুট চওড়া। প্রতিটি বেডের মাঝে মাঝে বাঁশ আর নেট দিয়ে মাচা করে দিয়েছেন। প্রতিটি মাচাতেই ঝুলে আছে পাকা ও দেখতে চমৎকার তরমুজ।
হানিফ আরও বলেন, ৫০ দিনে তার ভাসমান ধাপে তরমুজ ধরছে তিনশর বেশি । প্রতিটি তরমুজের ওজন হয়েছে ২ থেকে ৩ কেজি করে। এক এক টা তরমুজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বলে তিনি জানান।
ভাসমান ধাপে অসময়ে তরমুজ চাষে তার খরচও কম। সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। হানিফ ধারণা করছেন, তরমুজ বিক্রি থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা উঠে আসবে।
এই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে অন্য চাষিরাও উৎসাহিত হয়েছেন ।
স্থানীয় অধিবাসী ইকবাল কাজী আশ্চর্য হয়ে বলেন, আগে তিনি জানতেন যে চৈত্র মাসে তরমুজের চাষ হয়। কিন্তু এখন দেখছেন যে বর্ষাকালেও বিভিন্ন নতুন পদ্ধতিতে চাষ করছেন। এমনকি ধাপের ওপর ভাসমান বেডে চাষ হচ্ছে তরমুজ। আগামীতে তিনি সহ স্থানীয় লোকজনও এই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন অরবিন্দ কুমার রায়। তিনি জানান, এতদিন কৃষকরা ধাপের ওপর সবজি চাষ করে অনেক সফলতা পেয়েছেন। সেই সাথে এবার তরমুজ চাষেও সফলতা পাওয়া গেল। আগামী বছর থেকে এই এলাকার আরও কৃষক এভাবে তরমুজ চাষ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।