Friday, 05 December, 2025

পাট চাষের পদ্ধতি


সোনালি আশ

পাট হল একটি দীর্ঘ, নরম, চকচকে উদ্ভিদ তন্তু যা জুট প্ল্যান্টের কাণ্ড থেকে পাওয়া যায়। এটি প্রাথমিকভাবে দুটি প্রজাতির উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত: Corchorus olitorius এবং Corchorus capsularis। পাটের তন্তু বেশিরভাগই সোনালী এবং রেশমি রঙের হয়, তাই একে “সোনালী তন্তু” ও বলা হয়।

পাট চাষের জন্য বিশেষ কিছু পরিবেশগত ও কৃষি শর্ত প্রয়োজন হয়। এখানে পাট চাষের জন্য প্রয়োজনীয় প্রধান উপাদানগুলি তুলে ধরা হলো:

চাষের সময়ঃ

আরো পড়ুন
অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে ‘জিরো টলারেন্স’ নিশ্চিত করতে হবে: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে ‘জিরো টলারেন্স’ নিশ্চিত করতে হবে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার ও অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিশ্চিত করতে সকলকে একসাথে Read more

কৃষি অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড: স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও চ্যানেল আইয়ের যৌথ উদ্যোগে ১১ জনকে সম্মাননা!
কৃষি অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড: স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও চ্যানেল আইয়ের যৌথ উদ্যোগে ১১ জনকে সম্মাননা!

কৃষিতে বিশেষ অবদানের জন্য আটজন ব্যক্তি ও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দিয়েছে বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (এসসিবি) এবং চ্যানেল আই। সারাদেশে Read more

চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত এ পাট বপনের সময়

চাষের উপযুক্ত আবহাওয়া

  • তাপমাত্রা: পাট গাছ গরম ও আর্দ্র জলবায়ু পছন্দ করে। পাট চাষের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা ২৪°C থেকে ৩৭°C।
  • বৃষ্টিপাত: পাট চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। বর্ষাকাল পাটের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত।

পাট চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী মাটি কোনটি:

পাট চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী মাটি হল পলিমাটির মাটি। পলিমাটি এমন মাটি যা নদীর পলি দ্বারা গঠিত হয় এবং এটি পুষ্টিতে সমৃদ্ধ, যার ফলে পাটের বৃদ্ধি ও ফলন ভালো হয়। পলিমাটি ছাড়াও দো-আঁশ এবং বেলে-দো-আঁশ মাটিও পাট চাষের জন্য উপযুক্ত।

  • মাটির ধরন: পাটের জন্য পলল, দো-আঁশ এবং বেলে-দো-আঁশ মাটি আদর্শ।
  • পিএইচ মান: মাটির পিএইচ মান ৬.৫ থেকে ৭.৫ এর মধ্যে থাকলে পাটের জন্য উপযোগী হয়।
  • পানি নিষ্কাশন: পাটের মাটি ভালোভাবে পানি নিষ্কাশন করতে সক্ষম হতে হবে, কারণ জলাবদ্ধতা পাট গাছের ক্ষতি করে।

বীজ:

কিভাবে পাটের ভালো চারা বাছাই করা হয় ? বীজ খুব গুরত্বপূর্ন-

  • গুণগত মানের বীজ: উচ্চ ফলনশীল এবং রোগ প্রতিরোধী জাতের বীজ ব্যবহার করা উচিত।
  • বীজ রোপণ: বীজ বপনের সময় সঠিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে যাতে গাছের পর্যাপ্ত স্থান পায়।

বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার পর চারাগাছগুলোকে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে, যেমন আগাছা পরিষ্কার করা, মাটি আলগা করা, এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পানি সরবরাহ করা। সমান উচ্চতার চারাগাছগুলো একত্রে রোপণ করলে যত্ন নিতে সুবিধা হয় এবং ফলন ভালো হয়।

চাষাবাদ পদ্ধতি:

  • জমি প্রস্তুতি: জমি ভালোভাবে চাষ এবং ঝুঁটি করতে হবে।
  • সার প্রয়োগ: পাট চাষের সময় সঠিক পরিমাণে জৈব এবং রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে।
  • রোগ ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ: প্রয়োজন অনুযায়ী পোকামাকড় নাশক এবং ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

সার প্রয়োগের সময় ও পরিমাণ:

পাট চাষে সার প্রয়োগ পদ্ধতি। মাটি চাষ করার সময় জৈব সার ও রাসায়নিক সার মাটিতে ভালোভাবে মেশাতে হবে।

  • জৈব সার: পাট চাষের জন্য গোবর সার বা কম্পোস্ট প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রতি হেক্টরে ১০-১৫ টন জৈব সার মাটিতে মেশানো উচিত।
  • রাসায়নিক সার:
    • নাইট্রোজেন (N): পাট চাষের জন্য নাইট্রোজেন সার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি হেক্টরে ৬০-৮০ কেজি নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করা যেতে পারে।
    • ফসফরাস (P₂O₅): প্রতি হেক্টরে ৩০-৪০ কেজি ফসফরাস সার প্রয়োগ করা উচিত।
    • পটাশ (K₂O): প্রতি হেক্টরে ২০-৩০ কেজি পটাশ সার ব্যবহার করা যেতে পারে।

পানি সেচ:

  • পানি সরবরাহ: প্রাথমিক অবস্থায় পানি সরবরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরে বৃষ্টির উপর নির্ভর করে পানি সেচ দিতে হবে।

ফসল সংগ্রহ:

  • ফসল তোলা: পাট গাছ যখন ১০০ থেকে ১২০ দিন বয়সে পৌঁছায়, তখন তা কেটে সংগ্রহ করতে হবে।
  • রেটিং: কাটা পাট গাছগুলো পানিতে ভিজিয়ে রেখে রেটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।

বাংলাদেশ ও ভারত পাট উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। পাটের চাষ পরিবেশের জন্যও উপকারী, কারণ এটি মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। পাট চাষের জন্য এই উপাদানগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব।

0 comments on “পাট চাষের পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ