বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা দেশেই ধান কাটার যন্ত্র তৈরি করেছে। যন্ত্রটির নামকরণ করা হয়েছে ‘ব্রি হোলফিড কম্বাইন হারভেস্টার’। প্রতিটি প্রায় ১২–১৩ লাখ টাকা করে দাম পড়বে। তবে তার পরেও দেশেই ধান কাটার যন্ত্র তৈরি হয়েছে বলে গর্ববোধ করছে ব্রি-র বিজ্ঞানীরা।
ব্রি-র বিজ্ঞানীরা ছয় মাসের চেষ্টায় এটি তৈরি করেন
ব্রির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম। তার নেতৃত্বে সাত–আটজনের দল গবেষণা করে যন্ত্রটি তৈরি করেন।
প্রায় ছয় মাসের চেষ্টায় তারা এটি তৈরি করেন।
তিনি বলেন, একই ধরনের বিদেশি যন্ত্রের তুলনায় বেশি ধান কাটার ক্ষমতা এই যন্ত্রের।
দেশের ছোট ছোট জমিতে এই যন্ত্র ব্যবহারের উপযোগী।
যন্ত্রের ফসল কাটার সক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে বেশি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে একটি যন্ত্র অন্তত ২০ বছর ধরে চলবে।
গবেষক দলের কয়েকজনের সঙ্গে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কথা হয়।
তারা জানায়, বিদেশ থেকে আনা হয় ব্রি হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টারের ইঞ্জিনটি।
তাছাড়া আর অন্যান্য সকল যন্ত্রপাতি স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে।
যন্ত্রটির ইঞ্জিনের ক্ষমতা ৮৭ হর্স পাওয়ার।
এক ঘণ্টায় যন্ত্রটি কাটতে পারবে তিন থেকে চার বিঘা জমির ধান।
যন্ত্রটি জ্বালানি খরচ সাশ্রয়ী বলেও বিজ্ঞানীরা দাবি করেন।
তাদের দাবি অনুসারে ঘণ্টায় সাড়ে তিন থেকে চার লিটার জ্বালানী প্রয়োজন পড়বে এ্ই যন্ত্রে।
প্রায় সকল যন্ত্রে কিছু না কিছু ফসল নষ্ট হয়।
তবে এই যন্ত্রে ধান কাটার পর ফসল নষ্ট হবার পরিমাণ শতকরা এক ভাগেরও কম।
বিদেশি যন্ত্র যেমন ইয়ানমার সহ বিভিন্ন কম্বাইন হারভেস্টারের দাম ২৫-৩০ লাখ টাকা পড়ে।
সেখানে এ যন্ত্রের দামও কম হবে, ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য কামরুজ্জামান মিলন।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে ধান কাটার বিভিন্ন যন্ত্র আনা হয়।
তবে সেগুলো মূলত বিস্তৃত মাঠের জন্য উপযোগী।
অন্যদিকে বাংলাদেশের জমি গুলো হয় টুকরা টুকরা।
এ বিষয় মাথায় রেখেই তারা এই যন্ত্র তৈরি করেছেন বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে কৃষিযন্ত্রের আমদানি নির্ভরতা কমাতেও এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক গত শুক্রবার সকালে গাজীপুরে ব্রির চত্বরে কম্বাইন হারভেস্টার এর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ব্রির বিজ্ঞানীরা ধান কাটার যন্ত্রটি নিজেরা গবেষণা করে তৈরি করেছেন।
এটিকে একটি অসাধারণ সাফল্য হিসেবে তিনি আখ্যা দেন।