প্রাকৃতিক উৎসে অনিয়ন্ত্রিত বাঁধ, পানি কমে যাবার ফলে প্রাকৃতিক উৎসের মাছের উৎপাদন দিন দিন কমে গেছে। মাছ চাষ এখন নিয়ন্ত্রিত এবং পুকুরে। বানিজ্যিক ভাবে মাছ চাষে তীব্র গরমের সময়ে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। আমরা জেনে নিব তীব্র গরমে মাছ চাষিদের করনীয়-
তীব্র গরমে মাছ চাষের সমস্যাসমূহঃ
১. পানিতে অক্সিজেনের (O2) মাত্রা কমে যাবে।
২. পানিতে এ্যামোনিয়া (ঘঐ৩) গ্যাসের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
৩. পানির পিএইচ (ঢ়ঐ) এর ভারসাম্য হারাবে।
৪. পানি অতিরিক্ত গরম হয়ে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য (ফাইটোপ্লাঙ্কটন এবং জুওপ্লাঙ্কটন) মারা যাবে।
৫. মাছ / চিংড়ি দূর্বল হয়ে পড়বে, ফলে চলাফেরার গতি হ্রাস পাবে।
৬. মাছ / চিংড়ির হযম শক্তি কমে যাবে, ফলে খাদ্য কম গ্রহন করবে।
৭. অতিরিক্ত তাপমাত্রায় পানিতে জৈব পদার্থ বেড়ে বিভিন্ন পরজীবী এবং ক্ষতিকর অনুজীব জন্মায়।
৮. মাছের গায়ে লাল লাল দাগ দেখা দিতে পারে এবং মাছ মারা যেতে পারে।
৯. অতিরিক্ত তাপমাত্রায় মাছের শ্লেষ্মা কমে গিয়ে শরীর খসখসে হয়ে যায়, ফলে মাছ দ্রুত ক্ষতিকর পরজীবী ও অনুজীব দ্বারা আক্রান্ত হবে।
গরমে মাছ চাষিদের চাষের পুকুরে করণীয়ঃ
১। হররা টেনে পুকুরের তলার গ্যাস বের করে দিতে হবে।
২। ১০০-২০০ গ্রাম চুন, ১০০-২০০ গ্রাম লবণ এবং ৫০ গ্রামের মতো চিটাগুড় প্রয়োগ করলে রাসায়নিক সমস্যা থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া যাবে।
৩। এ সময় বিশেষ পরিচর্যার মধ্যে অন্যতম হলো মাছের খাবার অর্ধেকে কমিয়ে আনতে হবে।
৪। সম্ভব হলে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা।
৫। অক্সিজেনের ঘাটতির জন্য শতকে ৩-৪টা করে অক্সিজেনের গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করতে হবে। ৬। স্থায়ী সমাধান হিসেবে এরেটর সেট করতে হবে।
৭। পুকুরে সেচের মাধ্যমে পানি প্রবেশ করানো যেতে পারে।
অধিক তাপমাত্রায় মাছের রেনু / নার্সারী পুকুরের জন্য করনীয়:
১. রেনু / পোনা সকালে বা সন্ধায় ছাড়তে হবে। অর্থাৎ ঠান্ডা পরিবেশে ছাড়তে হবে।
২. ছাড়ার সময় রেনু / পোনা গ্লুকোজ পানিতে কিছু সময় রেখে তারপর পুকুরে ছাড়া যেতে পারে।
৩. রেনু / পোনার পুকুরে তুলনামূলক কম খাবার দিতে হবে।
৪. রেনু / পোনার পুকুরে কচুরিপানা/ নারিকেল পাতা/ কলাপাতা দিয়ে আশ্রয়স্থল করে দিতে হবে, যাতে অধিক তাপমাত্রায় রেনু / পোনা
অশ্রয় নিতে পারে।
৫. তাপমাত্রা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রেনু / পোনার খাবারের সাথে ভিটামিন-সি খাওয়াতে হবে।